অনেকেই আছেন যারা বিনা পুঁজিতে ব্যবসার আইডিয়া সম্পর্কে জানতে চান। আসলে বিনা পুঁজিতে ব্যবসা সম্পর্কে আইডিয়া দেওয়া সত্যি কঠিন। বর্তমান যুগে আপনি একেবারে কোন টাকা ছাড়াই কিছু করতে পারবেন এই কথা কেউ বলতে পারবে না। একেবারে বিনা পুঁজিতে কোন ব্যবসা আপনি করতে পারবেন না।
তবে এটা ঠিক আপনি বিনা পুঁজিতে ব্যবসা করতে না পারলেও একেবারে নামমাত্র পুঁজিতে আপনি কিছু ব্যবসা অবশ্যই করতে পারবেন। তবে এক্ষেত্রে আপনাকে কিছু বিষয়ে এক্সপার্ট হতে হবে এবং অনেক পরিশ্রম করতে হবে।
বিনা পুঁজিতে ব্যবসা
১. ড্রপশিপিং ব্যবসা
বিনা পুঁজিতে ব্যবসা করতে চাইলে আপনি ড্রপশিপিং ব্যবসা করতে পারেন। ড্রপশিপিং হচ্ছে এমন ব্যবসা যেখানে আপনি আপনার অনলাইন স্টোরের মাধ্যমে অন্য কোম্পানির পণ্য গ্রাহকদের সামনে প্রদর্শন করবেন। গ্রাহক যখন পণ্য পছন্দ করে সেটি ক্রয় করার জন্য অর্ডার করবে তখন আপনি সেই অর্ডার কোম্পানির কাছে পৌঁছে দিবেন। কোম্পানি তখন গ্রাহকের কাছে পণ্য পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করবে।
ড্রপশিপিং ব্যবসায় আপনার লাভ হচ্ছে কোম্পানি নির্দিষ্ট করা দামের চেয়ে বেশি দামে পণ্য গ্রাহকের কাছে বিক্রি করা। যেমন একটা শার্টের দাম হচ্ছে ৫০০ টাকা। আপনি সেই শার্ট গ্রাহকের কাছে ৬০০ টাকায় বিক্রি করে কোম্পানিকে ৫০০ টাকা পরিশোধ করলেন, তাহলে বাকি ১০০ টাকা হচ্ছে আপনার লাভ।
এই ধরণের ব্যবসা করার জন্য আপনার নিজের একটি ওয়েবসাইট থাকলে খুব ভাল হবে। সেখানে আপনি অন্য কোম্পানির পণ্য প্রমোট করবেন। অথবা অনলাইন স্টোরের বিভিন্ন প্লাটফর্ম আছে সেগুলোতেও স্টোর খুলে ব্যবসা শুরু করতে পারেন।
আরো পড়ুনঃ অল্প পুঁজিতে ২৫ টি আকর্ষণীয় ব্যবসার আইডিয়া
২. ব্লগ বিজনেস
যারা বিনা পুঁজিতে ব্যবসা করতে চান তারা ব্লগ বিজনেস শুরু করতে পারেন। ব্লগ বিজনেস হচ্ছে ব্লগ কন্টেন্টের মাধ্যমে পণ্য বা সার্ভিস বিক্রি করে ব্যবসা পরিচালনা করা।
এজন্য আপনাকে ভাল লেখক হতে হবে। কারণ ভাল লিখতে না পারলে আপনি ভক্ত তৈরি করতে পারবেন না। আর ভক্ত তৈরি না হলে পণ্য বা সার্ভিস বিক্রি করতে আপনার জন্য খুব কঠিন হবে।
ব্লগ বিজনেসের জন্য আপনাকে ভাল এবং উন্নতমানের কন্টেন্ট তৈরি করতে হবে। কারণ ভাল এবং উন্নতমানের কন্টেন্ট তৈরি করতে পারলে সার্চ ইঞ্জিন আপনার ব্লগকে হাই র্যাংক করবে যার ফলে আপনি প্রচুর ভিজিটর পাবেন। আর যত বেশি ভিজিটর আপনার ব্লগে আসবে তত বেশি আপনার পণ্য বা সার্ভিস বিক্রি হবে।
আরো পড়ুনঃ ২০২১ সালের জন্য ১০ টি নতুন ব্যবসার আইডিয়া
৩. ইউটিউব চ্যানেল
বিনা পুঁজিতে ব্যবসা করতে চাইলে আপনি একটি ইউটিউব চ্যানেল খুলতে পারেন। আজকাল ইউটিউবাররা প্রচুর আয় করছে। যেসব ইউটিউব চ্যানেল ১ লাখের বেশি সাবস্ক্রাইবার পেয়ে গেছে তারা ভাল পরিমাণে আয় করছে। এ জন্য তাদের খুব বেশি পুঁজিও লাগছে না।
ইউটিউব থেকে আয় করার জন্য আপনাকে ভাল কোয়ালিটির ভিডিও তৈরি করতে হবে। সাবস্ক্রাইবার বাড়ানোর জন্য যেসব উপায় আছে সেগুলো অনুসরণ করে সাবস্ক্রাইবার বাড়াতে হবে।
ইউটিউবে আপনার ভিডিও কন্টেন্টের ভেতর বিভিন্ন কোম্পানির পণ্য বা সার্ভিস প্রমোট করতে পারেন।তারপর বিভিন্ন কোম্পানির ক্যাম্পেইন পরিচালনা করে তাদের পণ্য বা সার্ভিস বিক্রির ব্যবস্থা করতে পারেন। এসব উপায়ে ইউটিউবাররা প্রচুর আয় করে থাকে।
আরো পড়ুনঃ বর্তমানে জনপ্রিয় ২০ টি উৎপাদন ব্যবসার আইডিয়া
৪. ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট
যারা দূর থেকে কোন প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন দাপ্তরিক কাজ করে থাকে তাদেরকে ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট বলে। একজন ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট বিভিন্ন ধরণের কাজ করে থাকে যেমন ফাইল তৈরি, মিটিং এর ব্যবস্থা, ক্লায়েন্টদের সাথে যোগাযোগ করা, মেইল গ্রহণ এবং পাঠানো, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম পরিচালনা ইত্যাদি।
আপনি যদি দক্ষ ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট হয়ে থাকেন তাহলে আপনার দ্বারা প্রচুর আয় করা সম্ভব। এমনকি কিছু দক্ষ ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট নিয়ে আপনি একটি ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট সাপ্লাই এজেন্সিও খুলতে পারেন। আপনার এজেন্সির কাজ হবে নির্দিষ্ট ফি’র বিনিময়ে ক্লায়েন্টদের ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট সাপ্লাই দেওয়া।
৫. অনলাইন কনসালটেন্ট
যারা বিনা পুঁজিতে ব্যবসা করতে চায় তারা অনলাইন কনসালটেন্ট হিসেবে কাজ শুরু করতে পারে। আজকাল অনেকেই অনলাইনে বিভিন্ন ধরণের বিষয়ের উপর পরামর্শ দিয়ে ভাল পরিমাণে আয় করছে।
আপনি যে বিষয়ে খুব ভাল জানেন সে বিষয়ে অনলাইনে পরামর্শ দেওয়া শুরু করতে পারেন। সেটা যে কোন বিষয় হতে পারে, যেমন ফ্রিলেন্সিং, খেলাধুলা, শরীরচর্চা, আইন, বিনিয়োগ, ডিজিটাল মার্কেটিং ইত্যাদি। প্রথম প্রথম আপনাকে ফ্রিতে মানুষকে বিভিন্ন পরামর্শ দিতে হবে। একসময় দেখবেন আপনার অনেক ফ্যান হয়ে গেছে। তখন আপনি কনসালটেন্সি বিজনেস শুরু করতে পারেন। অর্থাৎ অর্থের বিনিময়ে আপনি গ্রাহকদের পরামর্শ দিবেন।
এই ধরণের ব্যবসার জন্য নিজের একটি ওয়েবসাইট থাকলে খুব ভাল কারণ সেখানে আপনার কাজের অভিজ্ঞতা এবং গ্রাহকদের ফিডব্যাকগুলো নতুন গ্রাহকদের কাছে সুন্দরভাবে প্রদর্শন করতে পারবেন। এর ফলে আপনার নতুন গ্রাহক পাওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেড়ে যাবে।
৬. সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম পরিচালনা
