গ্রামের ব্যবসার আইডিয়া

আপনি যেহেতু গ্রামের ব্যবসার আইডিয়া খুঁজছেন তাই বলা যায় আপনি গ্রামে বসবাস করছেন। তবে গ্রামে ব্যবসা করার জন্য আপনাকে সবসময় গ্রামে থাকতে হবে ব্যাপারটা এমন নয়। আপনি শহরে থেকেও গ্রামে ব্যবসা পরিচালনা করতে পারবেন।

তবে আপনি যে ব্যবসাই করেন না কেন আপনাকে নিয়মিত গ্রামে গিয়ে আপনার ব্যবসার প্রজেক্টের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে খোঁজখবর নিতে হবে। যাদেরকে আপনি আপনার ব্যবসা দেখাশোনা করতে দিয়েছেন তাদেরকে বিভিন্ন ডিরেকশন দিয়ে আসতে হবে। তবে যারা একেবারে স্থায়ীভাবে গ্রামের বাড়িতে থাকেন তাদের ব্যাপার আলাদা। তারা নিজ বাড়িতে থেকেই ব্যবসার দেখাশুনা করতে পারবেন।

২০ টি লাভজনক গ্রামের ব্যবসার আইডিয়া

অনেকেই মনে করেন গ্রামে ব্যবসার কোন সুযোগ নেই, ব্যবসা করার জন্য গ্রাম ছেড়ে শহরে পাড়ি জমাতে হবে। কিন্তু আজকে “ গ্রামের ব্যবসার আইডিয়া” এই আর্টিকেলে আমি আপনাদের গ্রামে করা যায় এমন ২০ টি ব্যবসা সম্পর্কে জানাব যা আপনার জীবনকে বদলে দিতে পারে।

১. হাঁস-মুরগি লালন পালন   

গ্রামে হাঁস-মুরগি লালন পালন করা একটি কমন ব্যবসা। গ্রামের ব্যবসার আইডিয়া হিসেবে এটাকে আমি প্রথমে রেখেছি কারণ গ্রামের যে কেউ হাঁস-মুরগি পালতে পারে। গ্রামে হাঁস-মুরগি পালাও খুব সহজ।

হাঁস পালন করার জন্য একটি পরিষ্কার পরিছন্ন ঘর তৈরি করতে হবে যেখানে হাঁসগুলো সাছন্দের সাথে থাকতে পারে। হাঁসের ঘরের পাঁশে জলাধার থাকলে খুব ভাল। আর যদি জলাধার না থাকে তাহলে পুকুর বা নদীতে সাঁতার কাটতে দিতে হবে। গ্রামে যেহেতু পুকুর নদী-নালার কোন অভাব নেই। তাই আপনি যদি এদের পুকুরে-নদীতে ছেড়ে দেন তাহলেও এরা সাঁতার কাটবে আর নিজের খাবার নিজেই খুঁজে নিবে।

গ্রামে মুরগি পালা আরও সহজ। মুরগীগুলো ঘুরে ঘুরেই তাদের খাবার সংগহ করতে পারে। তবে ব্রয়লার মুরগি হলে অবশ্যই নিয়ম অনুযায়ী খাবার দেওয়াসহ অন্যান্য যত্ন নিতে হবে।

২. চায়ের দোকান  

গ্রামের ব্যবসার আইডিয়া

গ্রামে চায়ের দোকান থাকবে না তা হতে পারে না। কারণ এই চায়ের দোকানগুলো হচ্ছে গ্রামের মানুষের আড্ডাস্থল। ছেলেবুড়ো সবাই দল বেঁধে চা খাবে আর আড্ডা দিবে।

অল্প পুঁজি দিয়ে আপনার গ্রামে একটি চায়ের দোকান দিতে পারেন। চায়ের দোকানে একটি টিভি রাখবেন তাহলে গ্রাহক অনেক বেশি পাবেন।

আরো পড়ুনঃ বর্তমানে জনপ্রিয় ২০ টি উৎপাদন ব্যবসার আইডিয়া

৩. নার্সারি ব্যবসা 

নার্সারি ব্যবসার জন্য গ্রাম হচ্ছে সবচেয়ে উপযুক্ত যায়গা কারণ গ্রামে সবারই কম বেশি খালি জমি থাকে। এসব জমি অনেক সময় পরিত্যাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকে। অথচ এইসব পড়ে থাকা জমিতে আপনি অল্প পুঁজিতে বিভিন্ন ফুল,ফল, কাঠ, শোভাবর্ধনকারী বা ভেষজ গাছের চারা লাগিয়ে নার্সারির ব্যবসা করতে পারেন।

গাছগুলোর ভাল করে পরিচর্যা করুন। নার্সারির জন্য আলোবাতাস ঢুকে এমন খোলামেলা জায়গা নির্বাচন করবেন।যায়গাটি একটু উঁচু হলে ভাল তাহলে বন্যার পানি প্রবেশ করতে পারবে না।

নার্সারির জন্য বীজতলা তৈরি, চারা উৎপাদন, চারার পরিচর্যা, চারা তোলা, কলম তৈরি ইত্যাদি কাজ করার জন্য আপনার বিভিন্ন ধরণের যন্ত্রপাতি লাগবে, এসব যন্ত্রপাতির মধ্যে রয়েছে কোদাল, নিড়ানি, চালনি, নলকূপ, কাঁচি, পাইপ, শাবল, ঝুড়ি, বদনা, বাঁশ ইত্যাদি। তাই এসব যন্ত্রপাতি আপনাকে সংগ্রহে রাখতে হবে।

আরো পড়ুনঃ

৪. সার ও কীটনাশকের দোকান 

গ্রামে সার ও কীটনাশকের ব্যবসা খুব ভাল চলবে কারণ চাষাবাদ মূলত গ্রামাঞ্চলেই হয়ে থাকে। সার ও কীটনাশকের গ্রাহকরাও সবাই গ্রামেই থাকে। গ্রামের এই চাহিদাকে পুঁজি করে আপনি সার ও কীটনাশকের দোকান দিতে পারেন।

আপনার দোকান থেকে কৃষকরা যাতে নিয়মিত সার ও কীটনাশক ক্রয় করে এজন্য কৃষকদের সাথে যোগাযোগ রাখতে হবে। গ্রামবাসীকে আপনার ব্যবসা সম্পর্কে অবহিত করতে হবে।

৫. শাক-সবজির ব্যবসা 

শাক-সবজির ব্যবসা একটি লাভজনক গ্রামের ব্যবসার আইডিয়া। আপনার বাড়ি থেকে শহরের দূরত্ব যদি খুব বেশি না হয় তাহলে আপনি গ্রাম থেকে সবজি নিয়ে শহরে বিক্রি করতে পারেন। বর্তমানে যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত হওয়ার কারণে গ্রাম থেকে পণ্য নিয়ে শহরে যেতে খুব বেশি সমস্যা হয় না। অটোরিকশা, ব্যাটারি রিকশা বা ভ্যান দিয়ে আপনি খুব সহজে সবজি শহরে নিয়ে যেতে পারবেন।

৬. দুধের ব্যবসা 

গ্রামাঞ্চলে সহজে করা যায় এরকম আরেকটি গ্রামের ব্যবসার আইডিয়া হচ্ছে দুধের ব্যবসা। গ্রামে দুধ উৎপাদন করা খুব সহজ। কারণ প্রত্যেকের বাড়িতেই গাভী পালন করার মত যথেষ্ট যায়গা থাকে। আপনি একটি বা দুটি গাভী নিয়ে শুরু করতে পারেন দুধের ব্যবসা।

সবজি বিক্রির মত দুধও আপনি শহরে নিয়ে গিয়ে বিক্রি করতে পারেন। শহর যদি খুব বেশি দূরে হয় তাহলে গ্রামের বাজারে বিক্রি করতে পারেন। আবার সরাসরি পাইকারের কাছেও বিক্রি করতে পারেন।

৭. ফলের ব্যবসা 

ফলের ব্যবসা

গ্রামে যেহেতু আবাদ করার মত প্রচুর খালি যায়গা পাওয়া যায় তাই আপনি সহজেই ফলের ব্যবসা শুরু করতে পারেন। আম, জাম, লিচু, কাঁঠাল, আনারসসহ আপনার এলাকায় উৎপাদন করা যাবে এমন ফলের গাছ লাগাতে পারেন। গাছগুলোর ভালভাবে পরিচর্যা করতে পারলে ফল বিক্রি করে বছরে কয়েক লাখ টাকা আয় করতে পারবেন।

৮. ঔষধের দোকান

আমরা সবাই জানি যে গ্রামে ফার্মেসির খুব অভাব। ঔষধের প্রয়োজন হলেই গ্রামের মানুষকে শহরের পানে ছুটতে হয়। তাই গ্রামের মানুষের এই সমস্যা দূর করা এবং আপনার লাভের জন্য গ্রামে একটি ঔষধের দোকান দিতে পারেন। এটা ঠিক যে গ্রামে মানুষ কম তাই সব ধরণের ঔষধের ক্রেতা গ্রামে পাওয়া যাবে না। তাই যেসব ঔষধ বেশি চলে সেসব ঔষধ দোকানে রাখতে পারেন।

৯. ফ্লেক্সি লোড/মোবাইল ব্যাংকিং

ফ্লেক্সিলোড এবং মোবাইল ব্যাংকিং সেবা শহর থেকে গ্রাম সব যায়গাতেই প্রয়োজন। তাই এর গ্রাহক সব যায়গাতেই আছে।

একটি ছোট দোকান নিয়ে আপনি ফ্লেক্সিলোড এবং মোবাইল ব্যাংকিং এর ব্যবসা শুরু করতে পারেন। বিকাশ, নগদ, রকেট ইত্যাদি মোবাইল ব্যাংকিং সার্ভিস দোকানে অবশ্যই রাখবেন।

১০. এজেন্ট ব্যাংকিং 

এজেন্ট ব্যাংকিং হচ্ছে ব্যাংকের প্রতিনিধি হয়ে অনলাইন ব্যবহার করে যেসব যায়গায় ব্যাংকের শাখা নেই সেসব যায়গায় গ্রাহকদের ব্যাংকিং সেবা প্রদান করা। যদি আপনার গ্রামে ব্যাংকের কোন শাখা না থাকে তাহলে আপনি এজেন্ট ব্যাংকের শাখা আনতে পারেন। এর ফলে আপনি ব্যাংকের বিভিন্ন লেনদেনের বিপরীতে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ কমিশন লাভ করবেন।

এজেন্ট ব্যাংকের কাজ সুন্দরভাবে সমাধা করার জন্য একটি অফিস লাগবে এবং কিছু কর্মীর প্রয়োজন হবে। এছাড়া আপনার অফিসে ইন্টারনেট সংযোগসহ কম্পিউটার থাকতে হবে।

১১. মুদি দোকান 

অল্প পুঁজি দিয়ে শুরু করা যায় এমন একটি গ্রামের ব্যবসার আইডিয়া হচ্ছে মুদি দোকান। গ্রামে যেহেতু দোকান ভাড়া অনেক কম তাই আপনার খরচও খুব বেশি হবে না। আপনি যে পরিমাণ মুদি পণ্য দোকানে উঠাবেন তার উপর নির্ভর করবে আপনার কেমন খরচ হবে।

১২. কম্পিউটার প্রশিক্ষণ কেন্দ্র

ডিজিটাল এই যুগে টিকে থাকতে হলে আপনাকে কম্পিউটার জানতেই হবে। কারণ এখন সবকিছু ডিজিটাল হয়ে যাচ্ছে। আগের দিনের মত হাতে লিখে এখন আর আবেদন করতে হয় না। সবকিছু এখন অনলাইনে চলে গেছে। এছাড়া কম্পিউটার চালাতে পারলে ফ্রিল্যান্সিং করে আয় করা যায় যা গ্রামের মানুষের বেকারত্ব কমাতে সাহায্য করছে।

এসব কারণে বর্তমানে গ্রামের মানুষের মধ্যেও কম্পিউটার শেখার আগ্রহ বাড়ছে। তাই আপনি যদি কম্পিউটারের বিভিন্ন অ্যাপ্লিকেশন চালানোয় এক্সপার্ট হয়ে থাকেন তাহলে একটি কম্পিউটার প্রশিক্ষণ কেন্দ্র দিতে পারেন। এক্ষেত্রে নিয়মিত ছাত্র পাওয়ার জন্য গ্রামের তরুণদের কম্পিউটার শেখার সুফল সম্পর্কে জানিয়ে তাদের কম্পিউটার শেখার জন্য উৎসাহ দিতে হবে। তারা যাতে কম্পিউটারের বিভিন্ন অ্যাপ্লিকেশনের ব্যবহার শিখে ফ্রিলেন্সিং করে আয় করতে পারে সেজন্য তরুণদের গাইড করতে হবে।

১৩. ক্ষুদ্র ঋণ ব্যবসা   

গ্রামে ক্ষুদ্র ঋণের ব্যবসা খুব জমজমাট চলে। যাদের হাতে অলস টাকা আছে তারা চাইলেই গ্রামে ক্ষুদ্র ঋণের ব্যবসা শুরু করতে পারে।

আপনার যদি পুঁজি কম থাকে তাহলে ছোট পরিসরে ক্ষুদ্র ঋণ কার্যক্রম চালাতে পারেন। যেসব গ্রাহক ঋণ নিলে তা ফেরত দিতে পারবে এরকম মানুষকে ঋণ দিয়ে এই ব্যবসা শুরু করতে পারেন। ব্যবসার শুরুতেই খুব বেশি মানুষকে ঋণ দিবেন না। প্রথমদিকে মোটামুটি সচ্ছল গ্রাহককে ঋণ দিতে হবে। তারপর যখন পুঁজির পরিমাণ বাড়বে তখন ধীরে ধীরে ঋণ দেওয়ার পরিমাণ বাড়াবেন।

১৪. মৌমাছি পালন   

মৌমাছি পালন

গ্রামে প্রচুর গাছপালা আছে। মৌমাছি লালন পালন করার জন্য গাছপালাসহ এমন প্রাকৃতিক পরিবেশ প্রয়োজন। তাই আপনি ইচ্ছে করলে আপনার গ্রামে মৌমাছি পালন করতে পারেন। যদি আপনি খাঁটি মধু উৎপাদন করতে পারেন তাহলে আপনি প্রচুর মুনাফা করতে পারবেন।

মৌমাছি চাষ শুরু করার আগে অবশ্যই মৌমাছি কিভাবে পালতে হয় সে সম্পর্কে জানতে হবে। কিভাবে মধু সংগ্রহ করে সংরক্ষণ করতে হয় সেসব সম্পর্কেও জ্ঞান থাকতে হবে।

১৫. শামুকের চাষ

এটি একটি আনকমন গ্রামের ব্যবসার আইডিয়া। গ্রামে সবারই কম বেশি পুকুর ডোবা ইত্যাদি আছে। আপনি ইচ্ছে করলে এসব পুকুর বা ডোবায় শামুকের চাষ করতে পারেন।

শামুকের মাংস মাছের খাবার হিসেবে ব্যবহৃত হয় এবং শামুকের খোলস থেকে চুন তৈরি করা যায়।তাই আপনার যদি মাছের ঘের থাকে তাহলে সেসব শামুক মাছের খাবার হিসেবে ব্যবহার করতে পারবেন। আর নাহলে বাজারে বিক্রি করে ভাল পরিমাণে আয় করতে পারবেন।

১৬. মাছের চাষ  

মাছ চাষ একটি লাভজনক ব্যবসার আইডিয়া। মাছ চাষ করে অনেক উদ্যোক্তা লাভবান হচ্ছেন এবং এর মাধ্যমে তাদের জীবন নির্বাহ করছেন।

গ্রামে যেহেতু প্রচুর পুকুর থাকে তাই আপনি খুব সহজেই মাছের চাষ শুরু করতে পারেন। নিজের পুকুর না থাকলেও অন্যের পুকুর লিজ নিয়েও মাছ চাষ করতে পারেন। মাছ চাষ দুই ধরণের হয়। একটি হচ্ছে মাছের পোনা উৎপাদন অন্যটি হচ্চে মাছ উৎপাদন। তাই আপনি ইচ্ছে করলে পোনা উৎপাদন করতে পারেন আবার ইচ্ছে করলে মাছ উৎপাদন করতে পারেন।

১৭. ডিমের ব্যবসা 

গ্রামে যেহেতু মুরগি পালা সহজ তাই আপনি ডিমের ব্যবসা শুরু করতে পারেন। বাড়ির উঠানেই কিছু মুরগি নিয়ে ডিম উৎপাদনের কাজ শুরু করতে পারেন।

এমন মুরগি পালন করবেন যেগুলোর ডিম উৎপাদন ক্ষমতা বেশি। বেশি ডিম দেয় মুরগি চেনার কিছু নিয়ম আছে, যেমন মাথা হবে ছোট, হালকা এবং মাংশল অংশ থাকবে কম। চোখ থাকবে উজ্জ্বল। দেহ হবে সুগঠিত।

স্বর্ণা জাতের মুরগির কথা বলা যায়। এদের ডিম উৎপাদন ক্ষমতা অন্যান্য মুরগির তুলনায় বেশি। এরা ২০ সপ্তাহ থেকে ডিম দেওয়া শুরু করে এবং ১০০ সপ্তাহ পর্যন্ত টানা ডিম দিতে থাকে।

তবে দেশি মুরগীর ডিম উৎপাদন ক্ষমতা অনেক কম। দেশি মুরগি ডিম পাড়ার জন্য ২০-২৪ দিন সময় নিয়ে থাকে। তাই দেশি মুরগি দিয়ে আপনি ডিম উৎপাদন করে ডিমের ব্যবসা করা লাভজনক হবে না।

১৮. গরু-ছাগল লালন-পালন

গ্রামে গরু ছাগলের খামার করার জন্য অনেক যায়গা পাওয়া যায়। প্রথমদিকে অবকাঠামো করে খামার দেওয়ার প্রয়োজন নেই। বাড়িতেই গোয়াল ঘর তৈরি করে সেখানে ২-৩ টা গরু পালন করতে পারেন বা কয়েকটা ছাগল কিনে বড় করতে পারেন।

বর্তমানে ভারত থেকে গরু আমদানি বন্ধ হয়ে যাওয়াতে দেশে গরুর চাহিদা অনেক বেড়ে গেছে। আপনি যদি সঠিক নিয়মে কয়েকটি গরু মোটাতাজা করতে পারেন তাহলে কোরবানির ইদে ভাল দামে বিক্রি করতে পারবেন।

ছাগলের দামও প্রতি বছরই বেড়েই চলছে। তাই ছাগল বিক্রি করেও আপনি অনেক মুনাফা করতে পারবেন।

১৯. দর্জির ব্যবসা 

নিজের বাড়িতে অথবা বাজারে একটি দোকান ভাড়া নিয়েও কাপড় সেলাই করার ব্যবসা শুরু করতে পারেন। এই ব্যবসা শুরু করার আগে আপনাকে কিছু প্রশিক্ষণ নিতে হবে। যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর এবং মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর থেকে কাপড় সেলাই বিষয়ে বিভিন্ন প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। সেখান থেকে আপনি প্রশিক্ষণ নিতে পারেন।

আপনি যদি সুন্দর করে জামার ডিজাইন করতে পারেন এবং সেলাই করতে পারেন তাহলে গ্রামে আপনার সুনাম ছড়িয়ে যাবে। একবার যদি মানুষের মুখে মুখে আপনার সুনাম ছড়িয়ে যায় তাহলে আপনাকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হবে না।

২০. আইসক্রিমের ব্যবসা 

আইসক্রিমের ব্যবসার আইডিয়া হতে পারে একটি লাভজনক গ্রামের ব্যবসার আইডিয়া। গ্রামে যেহেতু সল্প আয়ের মানুষজন থাকে তাই কম দামী আইসক্রিমের ব্যবসা করতে হবে।

আইসক্রিমের দোকান স্কুল, কলেজের সামনে বা বাজারে দিলে খুব ভাল চলবে। আপনি চাইলে নিজেই ফ্যাক্টরি দিয়ে আইসক্রিম উৎপাদন করতে পারেন। আর যদি সে সামর্থ্য না থাকে তাহলে শহর থেকে আইসক্রিম সংগ্রহ করে গ্রামে নিয়ে বিক্রি করতে পারেন।

পরিশেষে

আশা করি গ্রামের ব্যবসার আইডিয়া সম্পর্কে আপনার ভাল একটা ধারণা হয়েছে। এখন বাস্তবায়নের দায়িত্ব আপনার। আপনার ইচ্ছাশক্তি, স্পৃহা, দক্ষতা এবং সৃজনশীলতা আপনার ব্যবসার ক্ষেত্রে অনুঘটক হিসেবে কাজ করবে।

আসুন পরিশেষে এক নজরে গ্রামের ব্যবসার আইডিয়া সমূহ আরেকবার দেখে নিই –

১. হাঁস-মুরগি লালন পালন
২. চায়ের দোকান
৩. নার্সারি ব্যবসা
৪. সার ও কীটনাশকের দোকান
৫. শাক-সবজির ব্যবসা
৬. দুধের ব্যবসা
৭. ফলের ব্যবসা
৮. ঔষধের দোকান
৯. ফ্লেক্সি লোড/মোবাইল ব্যাংকিং
১০. এজেন্ট ব্যাংকিং
১১. মুদি দোকান
১২. কম্পিউটার প্রশিক্ষণ কেন্দ্র
১৩. ক্ষুদ্র ঋণ ব্যবসা
১৪. মৌমাছি পালন
১৫. শামুকের চাষ
১৬. মাছের চাষ
১৭. ডিমের ব্যবসা
১৮. গরু-ছাগল লালন-পালন
১৯. দর্জির ব্যবসা
২০. আইসক্রিমের ব্যবসা

বাংলাদেশ বিজনেস জার্নাল বাংলাদেশের প্রথম গবেষণাধর্মী একটি বিজনেস ব্লগ। আমরা উদ্যোক্তাদের ব্যবসা সম্পর্কিত বিভিন্ন আইডিয়া, পরিসংখ্যান এবং সম্ভাবনা সম্পর্কে পরামর্শ দিয়ে থাকি। আমাদের লেখা এবং পরামর্শ যদি উদ্যোক্তাদের ব্যবসায়িক সমৃদ্ধির পাথেয় হয়ে থাকে তাহলেই আমাদের পরিশ্রম সার্থক হয়েছে বলে আমাদের কাছে প্রতীয়মান হবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here