কৃষি ব্যবসার আইডিয়া

যদিও আমাদের দেশের অর্থনীতি কৃষি নির্ভরতা থেকে ক্রমান্বয়ে শিল্প নির্ভরতার দিকে ধাবিত হচ্ছে তারপরও দেশের একটা বড় অংশ এখনো কৃষি ভিত্তিক কার্যক্রমের সাথে জড়িত। কৃষি ব্যবসার আইডিয়া নিয়ে লেখার উদ্দেশ্য হচ্ছে যারা কৃষি ব্যবসার উদ্যোগ নিতে চাচ্ছেন কিন্তু কৃষি ব্যবসার আইডিয়া খুঁজে পাচ্ছেন না তাদের জন্য লাভজনক কিছু কৃষি ব্যবসার আইডিয়া শেয়ার করা।

২০ টি কৃষি ব্যবসার আইডিয়া

১. গরুর খামার

কৃষি ব্যবসার আইডিয়া হিসেবে গরুর খামারকে সবার আগে রাখলাম কারণ এটি তুলনামূলক সহজ এবং সম্ভাবনাময় ব্যবসা। ভারতীয় গরু আমাদের দেশে আসা বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণে দেশে গরুর চাহিদা অনেক বেড়ে গেছে। এই বিপুল চাহিদা বিশাল ব্যবসার ক্ষেত্রে তৈরি করেছে। যার কারণে অনেক উদ্যোক্তা গরুর খামার করতে আগ্রহী হচ্ছে।

গরুর খামার করার আগে গরু লালন পালন করার পদ্ধতি সম্পর্কে অবশ্যই আপনাকে জানতে হবে। গরুর রোগবালাই সম্পর্কেও ভাল ধারণা থাকতে হবে। আলোবাতাসযুক্ত খামারে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নিয়ে আপনি যদি গরু পালতে পারেন তাহলে গরুর খামার থেকে আপনি অনেক লাভবান হবেন।

২.মাছ চাষ 

কৃষি ব্যবসার আইডিয়া

কৃষি ব্যবসার আইডিয়া হিসেবে মাছ চাষকে অবশ্যই রাখতে হবে। মাছ চাষ কৃষির সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। এদেশের অসংখ্য মানুষ মাছ চাষের সাথে জড়িত।

মাছ চাষ শুরু করা খুব সহজ ব্যাপার। যাদের একটি পুকুর আছে তারাই মাছ চাষ শুরু করতে পারেন। যাদের পুকুর বা জলাশয় নেই তারা অন্যের পুকুর লিজ নিয়ে মাছ চাষ শুরু করতে পারেন। তবে যাদের পুকুর বা জলাশয়ের মত কোন যায়গা নেই তারা চৌবাচ্চায় বা মাছের খাচায় মাছ চাষ করছে।

যে পুকুরে মাছ চাষ করবেন সেটি অবশ্যই খোলামেলা এবং রোদ্রউজ্জ্বল জায়গা হতে হবে। পুকুরের আয়তন কমপক্ষে ১০ শতাংশ হতে হবে। আর গভীরতা ২-৩ মিটারে রাখতে হবে। পুকুর পাড়ে যাতে বড় গাছপালা বা ঝোপঝাড় না থাকে সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।

আরো পড়ুনঃ ২০ টি লাভজনক গ্রামের ব্যবসার আইডিয়া

৩. সার ও কীটনাশক ব্যবসা 

কৃষি ব্যবসার আইডিয়া হিসেবে সার ও কীটনাশক ব্যবসা একটি লাভজনক ব্যবসা হবে। সার ও কীটনাশকের চাহিদাও প্রচুর। সারা বছরেই এসব পণ্যের বিক্রি চলমান থাকে।

আপনার এলাকায় একটি দোকান নিয়ে সার ও কীটনাশকের ব্যবসা শুরু করতে পারেন। ডিলারদের কাছ থেকে সার ও কীটনাশক সংগ্রহ করবেন আর নিজের দোকানে রেখে কৃষকদের কাছে বিক্রি করবেন।

৪. জৈব সার উৎপাদন

জৈব সার ফসলের জন্য অনেক উপকারী। কারণ জৈব সার তৈরিতে কোন ধরণের কেমিক্যাল ব্যবহার করা হয় না। প্রাকৃতিক উপাদান ব্যবহার করে জৈব সার উৎপাদন করা হয়। এসব উপাদানের মধ্যে রয়েছে গোবর, আর্বজনা, হাড়ের গুড়া ইত্যাদি।

তাই আপনিও শুরু করতে পারেন জৈব সার উৎপাদন ব্যবসা। গ্রামের বাড়িতে জৈব সার তৈরি করা খুব সহজ। কারণ গ্রামে গোবর, হাড়ের গুড়া এসব খুব সহজলভ্য। আর আবর্জনা শহর থেকে গ্রাম সব জায়গায় অতি সহজলভ্য জিনিস। তাই দেরি না করে শুরু করে দিন জৈব সার উৎপাদন ব্যবসা।

আরো পড়ুনঃ বর্তমানে জনপ্রিয় ২০ টি উৎপাদন ব্যবসার আইডিয়া

৫. নার্সারি ব্যবসা

কৃষি ব্যবসার আইডিয়া হিসেবে নার্সারি ব্যবসা একটি লাভজনক ব্যবসা। আমাদের দেশে গাছ লাগানোর প্রতি আগ্রহ দিন দিন বাড়ছে। বিশেষ করে শহরে মানুষ তাদের বাড়ির ছাদে গাছ লাগানোর জন্য গাছের চারা কিনে থাকে।

আপনি অল্প পুঁজি দিয়েই নার্সারি ব্যবসা শুরু করতে পারবেন। নার্সারি ব্যবসা শুরু করার জন্য আপনার কয়েক বিঘা জমির প্রয়োজন। এমন যায়গায় নার্সারি করবেন যেখানে আলোবাতাস প্রবেশ করতে পারে। একটু উঁচু যায়গা নির্বাচন করবেন যাতে বন্যা হলেও বন্যার পানি প্রবেশ করতে না পারে।

নার্সারির জন্য বিভিন্ন ধরণের ফুল, ফল ও ভেষজ উদ্ভিদের চারা উৎপাদন করতে পারেন।ভালভাবে চারা উৎপাদন করতে পারলে বছরে নার্সারি ব্যবসা থেকে ২-৪ লাখ টাকা আয় করা সম্ভব।

৬. মধু উৎপাদন

মৌমাছি চাষ

মধু খেতে কে না পছন্দ করে। খাঁটি মধু কেনার জন্য সবারই চেষ্টা থাকে। কিন্তু খাঁটি মধু পাওয়াটাও ভাগ্যের ব্যাপার। তাই আপনি যদি খাঁটি মধু উৎপাদন করে বাজারে নিয়ে আসতে পারেন তাহলে আপনার গ্রাহকের অভাব হবে না।

মধু উৎপাদন করার জন্য আপনাকে ভাল জাতের মৌমাছি সংগ্রহ করতে হবে। তারপর মৌমাছি থাকার জন্য বাক্স তৈরি করতে হবে। মৌমাছির জন্য আদর্শ পরিবেশ তৈরি করার জন্য আশেপাশে গাছগাছালি রূপণ করতে হবে। মধু সংগ্রহ করে তা সঠিকভাবে সংরক্ষণ করতে হবে যাতে মধুর গুনাগুণ নষ্ট না হয়।

৭. শামুক চাষের ব্যবসা

শামুক চাষ ব্যবসাটি প্রচলিত কোন ব্যবসা না। অনেকেই মনে করতে পারেন শামুক তো পুকুর ডোবাতেই পাওয়া যায়। কিন্তু পুকুর ডোবাতে যেসব শামুক পাওয়া যায় সেগুলো পরিমাণে খুব অল্প। যা দিয়ে বিপুল পরিমাণ চাহিদা মেটানো সম্ভব নয়।

শামুকের ভেতরের মাংস মাছের খাবার হিসেবে খুব জনপ্রিয়। প্রায় সব ধরণের মাছ শামুকের ভেতরের অংশ খেতে খুব পছন্দ করে। অনেক মানুষও শামুকের মাংস খায়। শামুকের খোলস চুন তৈরিতে ব্যবহৃত হয়। এসব কারণে শামুকের যথেষ্ট চাহিদা রয়েছে। তাই আপনার যদি পুকুর বা ডোবা থাকে তাহলে শামুকের চাষ শুরু করতে পারেন।

আরো পড়ুনঃ ২০২১ সালের জন্য ১০ টি পাইকারি ব্যবসার আইডিয়া

৮. মাশরুম চাষ

কৃষি ব্যবসার আইডিয়া হিসেবে মাশরুম চাষ দারুণ একটি আইডিয়া। মাশরুম খুব পুষ্টিকর, সুস্বাদু এবং ঔষধি গুণ সম্পন্ন হওয়ায় বাজারে এর চাহিদাও অনেক।

বিভিন্ন জাতের মাশরুম আছে। একেক জাতের মাশরুমের দাম একেক রকম। তাই যেসব মাশরুমের দাম বেশি আপনি সেই জাতের মাশরুম চাষ করতে পারেন।

মাশরুম চাষ করা খুব সহজ। আপনার বাড়ির আশেপাশেই এর চাষ করতে পারবেন। মাশরুম বড়ও হয় দ্রুত। ১০ থেকে ১৫ দিনের মধ্যে মাশরুম বিক্রির উপযোগী হয়ে যায়। মাশরুম চাষ করে অনেকেই স্বাবলম্বী হচ্ছেন। তাই আপনিও ইচ্ছে করলে নিজের জমিতে মাশরুম চাষ শুরু করতে পারেন।

৯. হাঁস-মুরগির খামার

গ্রামাঞ্চলে হাঁস-মুরগি লালন পালন করা খুব সহজ। কারণ সবার বাড়িতেই মোটামুটি ভাল পরিমাণে খালি যায়গা থাকে। শহরাঞ্চলে হাঁস-মুরগির খামার করার মত যায়গা পাওয়া কঠিন ব্যাপার।

আপনার যদি খামার করার মত যায়গা থাকে তাহলে হাঁস-মুরগির খামার দিতে পারেন। এটি খুবই লাভজনক ব্যবসার আইডিয়া। এই ধরণের খামার করার জন্য নির্দিষ্ট নিয়ম আছে। খোলামেলা যায়গায় এই ধরণের খামার করতে হয়। হাঁসের জন্য এক ধরণের নিয়ম আবার মুরগির জন্য অন্য ধরণের নিয়ম। তাই খামার করার আগে যারা এসব বিষয়ে খুব ভাল জানেন তাদের কাছ থেকে ট্রেনিং নিয়ে নিবেন।

১০. ক্যাপসিকাম চাষ  

ক্যাপসিকাম চাষ

ক্যাপসিকাম বা মিষ্টি মরিচ এর চাহিদা আমাদের দেশে ধীরে ধীরে বাড়ছে। আমাদের দেশে এখনো সেভাবে ক্যাপসিকামের চাষ শুরু হয় নাই। সাধারণত বড় শহরের আশেপাশের চাষিরা ক্যাপসিকামের চাষ করে থাকে। কারণ ক্যাপসিকাম সাধারণত বিলাসবহুল হোটেল এবং শহরের বড় মার্কেটগুলোতেই মূলত বিক্রি হয়।

ক্যাপসিকাম চাষ অনেক লাভজনক ব্যবসা। কারণ দেশে এর উৎপাদন কম হওয়াতে বাজারে চাহিদা বেশি যার কারণে দামও অনেক। কিছুদিন আগে দক্ষিণবঙ্গ নামের একটি পত্রিকায় দেখলাম যশোরে এক কৃষক ২ লাখ টাকা খরচ করে ক্যাপসিকাম চাষ করে এক বছরে প্রায় ১২ লাখ টাকা আয় করেছেন। তারমানে বুঝতেই পারছেন কি রকম লাভজনক এই ব্যবসা।

১১. কোয়েল পাখির খামার

কৃষি ব্যবসার আইডিয়া গুলোর মধ্যে কোয়েল পাখির খামারের আইডিয়া একটি নতুন ব্যবসার আইডিয়া।কারণ আমাদের দেশে এখনও সেভাবে বাণিজ্যিকভাবে কোয়েল পাখির খামার করা হয় না। কিছু কিছু উদ্যোক্তা এই ব্যবসার দিকে এগিয়ে আসছে।

অল্প পুঁজি দিয়ে ছোট যায়গাতেও আপনি কোয়েল পাখির খামার করতে পারেন। আপনি চাইলে সেখানে ডিম উৎপাদন করতে পারবেন আবার চাইলে বাচ্চাও উৎপাদন করতে পারবেন। আবার শুধু কোয়েল পাখির মাংস উৎপাদনের জন্যও খামার করতে পারেন। আসলে একেকজন একেক উদ্দেশ্যে কোয়েল পাখির খামার করে থাকে।

কিছু দিন আগে ইনকিলাব পত্রিকায় একজন কোয়েল পাখির খামারির কথা পড়েছিলাম। সেখানে খামারি বললেন তিনি মাত্র ২০ হাজার টাকা পুঁজি নিয়ে ছয়শত কোয়েল পাখি নিয়ে খামার শুরু করেছিলেন যা বর্তমানে ৪০ হাজারে গিয়ে ঠেকেছে। পত্রিকার তথ্য মতে তিনি কোয়েল পাখির খামার করে কোটি টাকা আয় করেছেন। সুতরাং এই ব্যবসা করে আপনি যে প্রচুর আয় করতে পারবেন তা নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন।

১২. কৃষি বীজের ব্যবসা 

কৃষি ব্যবসার আইডিয়া হিসেবে কৃষি বীজের ব্যবসা আপনার জন্য একটি অসাধারণ ব্যবসার আইডিয়া হতে পারে। কারণ চাষাবাদের জন্য কৃষকদের বীজ কিনতেই হবে । তাই বাজারে বীজের অনেক চাহিদা।যেসব জিনিসের চাহিদা বেশি থাকে সেগুলোতে লাভও হয় বেশি।

বীজের ব্যবসা শুরু করা খুব সহজ। একটি দোকান ভাড়া করে সেখানেই শুরু করে দিন বীজের ব্যবসা। বীজের ডিলার আছে তাদের কাছ থেকে বীজ সংগ্রহ করবেন। বীজের দোকান দেওয়ার জন্য একটা জমজমাট যায়গা নির্বাচন করুন যেমন বাজার এলাকা। কারণ জমজমাট এলাকা ছাড়া আপনি খুব বেশি গ্রাহক  পাবেন না।

১৩. চালের ব্যবসা 

কৃষি ব্যবসার আইডিয়া গুলোর মধ্যে চালের ব্যবসা অন্যতম। চালের ব্যবসা এমন একটি ব্যবসা যেখানে ক্ষতি হওয়ার সভাবনা খুব কম। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দেখা যায় চালের দাম শুধু বাড়তেই থাকে। যখন চালের দাম কমে তখন সেটা আগে থেকেই ব্যবসায়ীরা জানতে পারে। যখন নতুন চাল বাজারে প্রচুর পরিমাণে উঠতে শুরু করে তখনই কেবল চালের দাম কিছুটা কমে থাকে।

চালের ব্যবসা করার জন্য পুঁজির পরিমাণ বেশি লাগে। কারণ চালের ব্যবসা করার জন্য আপনার একটি গুদাম ঘর লাগবে। তাছাড়া চাল কিনতে হয় অনেক বেশি পরিমাণে এবং পরিবহণ খরচও বেশি। আর যারা নিজেদের জমিতে উৎপাদিত চালের ব্যবসা করে তাদের হিসেব আলাদা। এজন্য ধান ভাঙ্গানোর জন্য আপনার চালকল লাগবে। নিজের চালকল না থাকলে অন্যের চালকলে টাকার বিনিময়ে আপনি চাল ভাঙ্গাতে পারবেন।

১৪. শাক-সবজির ব্যবসা   

শাক-সবজির ব্যবসা একটি লাভজনক ব্যবসা।শাক-সবজির ব্যবসা করে অনেকে স্বাবলম্বী হয়েছেন। আপনি তিনভাবে শাক-সবজির ব্যবসা করতে পারেন। একটি হচ্ছে নিজের জমিতে শাক-সবজির উৎপাদন করে পাইকারদের কাছে বিক্রি করা। দ্বিতীয়টি হচ্ছে কৃষকদের কাছ থেকে সবজি ক্রয় করে বিভিন্ন বাজারে সাপ্লাই দেওয়া। তৃতীয় হচ্ছে পাইকারদের কাছ থেকে সবজি ক্রয় করে বা নিজের জমিতে চাষ করা সবজি বাজারে নিয়ে সরাসরি ক্রেতাদের কাছে বিক্রি করা।

১৫. ফুলের ব্যবসা 

ফুলের ব্যবসা

ফুলের ব্যবসা হচ্ছে আরেকটি কৃষি ব্যবসার আইডিয়া। আমাদের দেশে রয়েছে ফুলের বিশাল বাজার। সারা বছর কমবেশি ফুল বিক্রি হলেও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস, পহেলা ফাল্গুন, ভালবাসা দিবসসহ বিভিন্ন দিবসে ফুলের চাহিদা অনেক বেড়ে যায়।

আপনার যদি নিজের জমি থাকে তাহলে সেখানে বিভিন্ন জাতের ফুল চাষ করতে পারেন। যেহেতু গোলাপ, গাঁদা এবং রজনীগন্ধার চাহিদা বেশি তাই এগুলো বেশি চাষ করতে পারেন। এছাড়া আপনি শহরে দোকান নিয়েও ফুলের ব্যবসা শুরু করতে পারেন। এক্ষেত্রে আপনাকে ফুলের পাইকারি বাজার থেকে ফুল সংগ্রহ করতে হবে।

১৬. ফলের ব্যবসা 

মানুষের আয় বাড়ার সাথে সাথে ফল খাওয়ার পরিমাণও বেড়ে গেছে। এজন্য আপনি খেয়াল করলে দেখবেন রাস্তাঘাটে প্রচুর ফলের দোকান হচ্ছে। এসব দোকানে বিক্রিও হচ্ছে দেদারছে।

আপনি নিজের জমিতে আম, জাম, লিচু আনারস, তরমুজ ইত্যাদি চাহিদাসম্পন্ন ফলের চাষ করতে পারেন। তারপর পাইকারদের কাছে পাইকারি দরে বিক্রি করতে পারেন। আবার নিজেও ফলের দোকান দিতে পারেন।

১৭. পাওয়ার টিলার ও ট্রাকটরের ব্যবসা

একটা সময় ছিল কৃষকরা গরু দিয়ে চাষাবাদ করত। কিন্তু সময়ের পরিক্রমায় সেই দিন বদলে গেছে। আমাদের দেশের কৃষিতে লেগেছে প্রযুক্তির ছোঁয়া। এখন কৃষিকাজে পাওয়ার টিলার ও ট্রাকটরের ব্যবহার হচ্ছে অহরহ। তাই এই পাওয়ার টিলার ও ট্রাকটরের বাজার ক্রমাগত বিস্তৃত হচ্ছে। ভবিষ্যতে আরও বাড়বে একথা নিশ্চিতভাবে বলা যায়। আপনি চাইলে সম্ভাবনাময় পাওয়ার টিলার ও ট্রাকটরের ব্যবসা শুরু করতে পারেন।

১৮. ডেইরি ফার্ম

ডেইরি ফার্ম একটি লাভজনক ব্যবসা। আপনি প্রথম দিকে দুইটি গাভী দিয়েও এই ব্যবসা শুরু করতে পারেন। প্রচুর দুধ দেয় এমন বিদেশি জাতের গাভী কিনতে হবে। গাভী লালন পালন করার জন্য একটি গোয়াল ঘর তৈরি করতে হবে। গোয়াল ঘর অবশ্যই আলোবাতাসযুক্ত স্থানে হতে হবে। গাভীগুলোকে নিয়ম মেনে পুষ্টিকর খাবার খাওয়াতে হবে যাতে প্রচুর দুধ দেয়।

আপনি পাইকারদের কাছে দুধ বিক্রি করতে পারেন। চাইলে শহরে বাড়ি বাড়ি সাপ্লাই দিতে পারেন বা একটা দোকান ভাড়া নিয়ে সেটাকে দুধ বিক্রির কেন্দ্র বানাতে পারেন।

 ১৯. ছাগল পালন 

ছাগলের ব্যবসা বর্তমানে খুব জমজমাট। ছাগলের মাংসের দামও উর্ধমুখি। ছাগল পালন তুলনামূলক সহজ কাজ। গরুর মত ঝামেলা নেই। ছোট একটা গোয়াল ঘরে আপনি একসাথে ৮-১০ টা ছাগল পালতে পারবেন। ভালভাবে যত্ন নিলে একটি ছাগী ৭ থেকে ৮ মাসের মধ্যে বাচ্চা দিতে পারে। এরা একসাথে ২ থেকে ৩ টি বাচ্চা দিয়ে থাকে যা খামারির জন্য একটা বড় প্লাস পয়েন্ট। এছাড়া একটা ছাগল খাসি ১২ থেকে ১৫ মাসের মধ্যে ১৫ থেকে ২০ কেজি পর্যন্ত ওজনের হয়ে থাকে। তাই নিয়ম অনুযায়ী ছাগল পালন করতে পারলে এটি আপনার জন্য একটি লাভজনক ব্যবসায় পরিণত হবে।

২০. ছাদ কৃষি 

কৃষি ব্যবসার আইডিয়া হিসেবে ছাদ কৃষি একটি চমৎকার আইডিয়া। আজকাল অনেক সৌখিন মানুষ তাদের ছাদে বাগান করছে। বেশিরভাগ মানুষ কেমিক্যালমুক্ত তাজা সবজি খাওয়ার জন্য এসব বাগান করে থাকে। তবে আপনি চাইলে এসব সবজি বিক্রি করে ভাল পরিমাণে আয়ও করতে পারবেন। আবার ছাদে বাগান করলে আপনি কিছু ট্যাক্স সুবিধাও পাবেন। আরেকটা বিষয় হচ্ছে নগরায়নের ফলে গাছের পরিমাণ দিন দিন কমছে যার ফলে আবহাওয়া দিন দিন উত্তপ্ত হয়ে যাচ্ছে। ছাদ কৃষি আমাদেরকে এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে কিছুটা হলেও সাহায্য করবে।

বাংলাদেশ বিজনেস জার্নাল বাংলাদেশের প্রথম গবেষণাধর্মী একটি বিজনেস ব্লগ। আমরা উদ্যোক্তাদের ব্যবসা সম্পর্কিত বিভিন্ন আইডিয়া, পরিসংখ্যান এবং সম্ভাবনা সম্পর্কে পরামর্শ দিয়ে থাকি। আমাদের লেখা এবং পরামর্শ যদি উদ্যোক্তাদের ব্যবসায়িক সমৃদ্ধির পাথেয় হয়ে থাকে তাহলেই আমাদের পরিশ্রম সার্থক হয়েছে বলে আমাদের কাছে প্রতীয়মান হবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here