বাংলাদেশে ই-কমার্সের সম্ভাবনা

১৯৯৯ সালে মুন্সিজি ডট.কম(munshiji.com) নামের একটি ওয়েবসাইটের মাধ্যমে বাংলাদেশে ই-কমার্সের গোড়াপত্তন হয়। একসময় মুন্সিজি.কম বন্ধ হয়ে গেলেও বাংলাদেশে ই-কমার্সের যাত্রা বন্ধ হয়ে যায় নি। নানা প্রতিবন্ধকতা কাটিয়ে ধীরে ধীরে প্রস্ফুটিত হচ্ছে এদেশের ই-কমার্স বাজার।

বর্তমানে প্রায় ৭,৫০০ প্রতিষ্ঠান ই-কমার্স ব্যবসার সাথে যুক্ত। এছাড়া ব্যক্তি পর্যায়ে হাজারো মানুষ এই ব্যবসায় যুক্ত হচ্ছে। প্রতিনিয়ত এই সংখ্যা বেড়েই চলছে। সাম্প্রতিক সময়ে ইন্টারনেটের ব্যাপক প্রসার ই-কমার্সের প্রবৃদ্ধিতে বিরাট ভূমিকা পালন করছে। মানুষের মধ্যে ই-কমার্সের প্রতি আগ্রহ বাড়ার কারণে বাংলাদেশে ই-কমার্সের ব্যাপক সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। কিন্তু অবকাঠামোসহ নানা সমস্যার কারণে ই-কমার্স এখনো কাঙ্ক্ষিত পর্যায়ে পৌছাতে পারে নি।

বাংলাদেশের ই-কমার্স খাত

বাংলাদেশের ই-কমার্সের প্রসার দিন দিন বেড়েই চলছে। ই-কমার্সের প্রসারে সরকারের নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপ ই-কমার্স এই প্রসারে ভূমিকা পালন করছে। ই-ক্যাবের মতে, বাংলাদেশে ই-কমার্সের লেনদেন বর্তমানে ১৬,৬১৬ কোটি টাকা। প্রায় ৫০ হাজার উদ্যোক্তা ফেসবুক পেইজের মাধ্যমে ই-কমার্স ব্যবসায়ের সাথে যুক্ত, তবে এর মধ্যে ২০ হাজার ফেসবুক পেইজ সক্রিয় আছে।

বাংলাদেশে ই-কমার্সের সম্ভাবনা

ক্রেতাদের প্রায় শতভাগ শহরের মানুষ কারণ ই-কমার্স উদোক্তারা এখনো শহর ক্রেন্দ্রিক। ক্রেতাদের বেশিরভাগের অবস্থান ঢাকা, চট্টগ্রাম, গাজীপুর, সিলেট ও নারায়ণগঞ্জ শহরে। ক্রেতাদের মধ্যে তরুণদের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য। ই-ক্যাবের তথ্য মতে, অনলাইনে ক্রেতাদের মধ্যে প্রায় ৭৫ শতাংশের বয়স ১৮-৩৪ বছরের মধ্যে। মোট জনসংখ্যার মাত্র ১ শতাংশ মানুষ অনলাইনে কেনাকাটা করে থাকে।

ক্রেতারা পেমেন্ট সিস্টেম হিসেবে ক্যাশ অন ডেলিভারিকেই সবচেয়ে বেশি অগ্রাধিকার দেয়, ৯০ শতাংশ পণ্য ক্যাশ অন ডেলিভারিতে বিক্রি হয়ে থাকে।

বাংলাদেশে ই-কমার্সের সম্ভাবনা

আরো পড়ুনঃ ই-কমার্স ব্যবসা কি? কিভাবে ই-কমার্স ব্যবসা শুরু করবেন?

বাংলাদেশে ই-কমার্সের সম্ভাবনা

যেহেতু বাংলাদেশ এখন ডিজিটাল সিস্টেমে চূড়ান্তভাবে প্রবেশ করার এক সন্ধিক্ষণে অবস্থান করছে তাই বলা যায় বাংলাদেশে ই-কমার্সের সম্ভাবনা অনেক। কারণ মানুষ যত বেশি ডিজিটাল সিস্টেমের সাথে অভ্যস্ত হবে অনলাইনে কেনাকাটা তত বেশি বাড়বে।

ডিজিটাল সিস্টেমের সাথে বাংলাদেশের মানুষের যুক্ততা যে বেড়েই চলছে তার প্রমাণ পাওয়া যায় ইন্টারনেটের পরিসংখ্যানের দিকে তাকালেই। বিটিআরসি’র হিসাবে বাংলাদেশে বর্তমানে ১১ কোটি ৭৩ লাখ মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহার করে যা ২০১৫ সালেও ছিল মাত্র ৫ কোটি ৫৪ লাখ মানুষ। মাত্র কয়েক বছরের ব্যবধানে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা দিগুণ হয়ে গেছে।

জার্মান ভিত্তিক গবেষণা সংস্থা স্ট্যাটিস্টার ২০১৯ সালের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে ই-কমার্সের বাজারের আকার ১,৬৪৮ মিলিয়ন ডলার যা ২০২০ সালে ২০৭৭ মিলিয়ন ডলারে পৌঁছাবে। ১৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধির হারে ২০২৩ সালে বাজারের আকার হবে ৩ হাজার ৭৭ মিলিয়ন ডলার।

ই-কমার্স ব্যবসায়ের সম্ভাবনা

বর্তমানে অনলাইনে কেনাকাটার প্রবণতা ২২.৪ শতাংশ বাড়লেও ২০২৩ সাল নাগাদ এই প্রবৃদ্ধি ২৬.৮ শতাংশে উন্নীত হবে। গ্রাহক প্রতি গড় আয় বাড়বে ৪৫.১৬ মার্কিন ডলার। ২০২৩ সাল নাগাদ অনলাইন গ্রাহকের সংখ্যাটা বেড়ে দাঁড়াবে ৪৫.৩ মিলিয়নে। খাতভিত্তিক অনলাইন ক্রয়ের মধ্যে ২০১৯ সালে ফ্যাশন বাজার ছিল সবচেয়ে বেশি, ৫৯৮ মিলিয়ন ডলার। ইলেক্ট্রনিক্স পণ্য ৪৫৭ মিলিয়ন ডলার, ফার্নিচার এবং অ্যাপারাল ১৯৬ মিলিয়ন ডলার, খেলনা এবং সৌখিন পণ্যের বিক্রি ছিল ২৬০ মিলিয়ন ডলার সমপরিমাণ।

বাংলাদেশে ই-কমার্স বাজারের কোন খাতে কত খরচ

অন্যদিকে ই-ক্যাবের তথ্য মতে, বাংলাদেশে গত কয়েক বছর ধরে ই-কমার্সের প্রবৃদ্ধি শতভাগের উপর। ২০১৭ সালে ই-কমার্স বাজারের আকার ছিল ৮,৬৩২ কোটি টাকা, ২০১৮ সালে ১০,৫০৪ কোটি টাকা, ২০১৯ সালে ১৩,১৮৪ কোটি টাকা, ২০২০ সালে ছিল ১৬,৬১৬ কোটি টাকা।

স্মার্টফোন ই-কমার্স ব্যবসা প্রসারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। বাংলাদেশে স্মার্টফোন ব্যবহারকারীর সংখ্যা বেড়ে চলছে। বাংলাদেশের স্মার্টফোন ব্যবহারকারীর সংখ্যা মোট মোবাইল ফোন ব্যবহারকারীর ৪১ শতাংশ। সম্প্রতি জিএসএমএ (গ্লোবাল সিস্টেম ফর মোবাইল কমিউনিকেশনস অ্যাসোসিয়েশন) একটি প্রতিবেদনে এই তথ্য প্রকাশ করে। তাদের তথ্য মতে বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার প্রায় ৯৫ শতাংশ ফোর-জি কাভারেজের আওতায় এসেছে।

বিভিন্ন পরিসংখ্যান এবং সংস্থার প্রতিবেদন থেকে বুঝা যায় বাংলাদেশের ই-কমার্স খাত দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। ই-কমার্স খাতের এই অগ্রগতি দেখে বড় বড় জায়ান্ট ই-কমার্স কোম্পানি এখন বাংলাদেশের বাজারে প্রবেশ করতে চেষ্টা করছে। বিখ্যাত ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান আলিবাবা ইতোমধ্যে দারাজকে অধিগ্রহণ করার মাধ্যমে বাংলাদেশের বাজারে প্রবেশ করেছে। আমাজন বাংলাদেশে ব্যবসা শুরু করার জন্য নিবন্ধন নিয়েছে। ভারতের সবচেয়ে বড় ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ফ্লিপকার্ট বাংলাদেশে প্রবেশ করতে চাইছে। পূর্ব ইউরোপের বড় ই-কমার্স কোম্পানি কিউভি বাংলাদেশের বাজারে প্রবেশ করেছে। এসব থেকে বুঝা যায় বাংলাদেশের ই-কমার্স খাতের সম্ভাবনা খুব ভাল এবং এর ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল।

অদূর ভবিষ্যতে ই-কমার্স খাত বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে বিরাট ভূমিকা পালন করবে। এর ফলে এই খাতে ব্যাপক কর্মসংস্থানেরও সৃষ্টি হবে।

আরো পড়ুনঃ ই-কমার্স ব্যবসায় সফল হওয়ার জন্য ১০ টি বিষয় অনুসরণ করুন

বাংলাদেশে ই-কমার্স খাতের সমস্যা  

বাংলাদেশের ই-কমার্স  খাত এগিয়ে চলছে বিভিন্ন সমস্যা এবং সীমাবদ্ধতার মধ্য দিয়ে। এসব সমস্যার কারণে ই-কমার্স খাত আশানুরূপ পর্যায়ে এখনো যেতে পারেনি। বাংলাদেশের ই-কমার্স খাতের সমস্যাগুলো নিচে আলোচনা করা হলঃ

  • পেমেন্ট মেথডে সমস্যাঃ আমাদের দেশে ই-কমার্সের প্রসারের ক্ষেত্রে পেমেন্ট মেথড সমস্যা একটি বড় অন্তরায়। এখনো ৯০ শতাংশ গ্রাহক ক্যাশ অন ডেলিভারিতে অভ্যস্ত। কিন্তু ই-কমার্সের প্রসারের জন্য শক্তিশালী পেমেন্ট ব্যবস্থা থাকা জরুরি। এছাড়া আমাদের দেশের ই-কমার্স কোম্পানিগুলো পেমেন্ট গেটওয়ে সমস্যার কারণে আন্তঃদেশীয় লেনদেন করতে পারে না।

  • পণ্য ডেলিভারি সমস্যাঃ পণ্য ডেলিভারি দেওয়ার জন্য পর্যাপ্ত কোম্পানির এখনো অনেক অভাব। যেগুলো আছে সেগুলো দিয়ে বিরাট জনগোষ্ঠীর কাছে পণ্য সরবরাহের ব্যবস্থা করা বেশ চ্যালেঞ্জিং। সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের অপর্যাপ্ততার কারণে সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানগুলো ডেলিভারি চার্যও অনেক বেশি নেয় যা ই-কমার্স ব্যবসায়ের জন্য একটি নেতিবাচক বিষয়।

  • ধীরগতিসম্পন্ন ও ব্যয়বহুল ইন্টারনেটঃ জনপ্রিয় ওয়েবসাইট স্পিডটেস্ট-এর গ্লোবাল ইনডেক্সের গত জানুয়ারি মাসে প্রকাশ করা সূচকে দেখা যায় ইন্টারনেটের গতির দিক দিয়ে বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে শুধু আফগানিস্তানের চেয়ে এগিয়ে। এছাড়া ইন্টারনেট প্যাকেজের মূল্যও অনেক বেশি যার কারণে সাধারণ মানুষ চাইলেও বেশি পরিমাণে ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারে না। আর ইন্টারনেট ব্যবহার কম করার কারনে অনলাইনে কেনাকাটায় সাধারণ মানুষের অংশগ্রহণ এখনো অনেক কম।

  • গ্রাহকদের আস্থার সংকটঃ বাংলাদেশে ই-কমার্সের প্রসারে সবচেয়ে বড় বাধাগুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে গ্রাহকদের আস্থার সংকট। কারণ আমরা মিডিয়াতে প্রায়ই দেখি ই-কমার্সের নামে অনেক প্রতিষ্ঠান গ্রাহকদের অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে। যেহেতু ই-কমার্স প্রতারণা প্রতিরোধে আমাদের দেশে কার্যকর কোন ব্যবস্থা এখনো প্রতিষ্ঠিত হয়নি তাই অনেকেই এটার সুযোগ নিয়ে গ্রাহকদের সাথে প্রতারণা করছে। এসব প্রতারণার খবর সাধারণ মানুষের কাছে নেতিবাচক বার্তা পৌঁছে দিচ্ছে যার কারণে অনেকেই অনলাইনে কেনাকাটা করতে সাহস পায় না।

  • অনলাইনে কেনাকাটায় মানুষের অনভ্যস্ততাঃ আমাদের দেশের মানুষের মধ্যে এখনো অনলাইনে কেনাকাটার অভ্যাস গড়ে উঠেনি। ই-ক্যাবের তথ্য মতে, মোট জনসংখ্যার মাত্র ১ ভাগ অনলাইনে কেনাকাটা করে থাকে। তারমানে খুবই কম মানুষ অনলাইনে কেনাকাটায় অভ্যস্ত।

  • বিদেশি কোম্পানির দৌরাত্ম্যঃ দারাজ অধিগ্রহণ করার মাধ্যমে বাংলাদেশের বাজারে ইতোমধ্যে আলিবাবা প্রবেশ করেছে। আরেক ই-কমার্স জায়ান্ট আমাজন বাংলাদেশে ব্যবসা শুরু করার জন্য নিবন্ধন নিয়েছে। আরও কিছু বড় বড় কোম্পানি বাংলাদেশের বাজারে প্রবেশ করেছে। এসব বড় বড় কোম্পানির সাথে প্রতিযোগিতা করে টিকে থাকা খুবই চ্যালেঞ্জিং। এজন্য অনেক ছোট ছোট ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ক্ষতির সম্মুখীন হয়ে ইতোমধ্যে ব্যবসা ছেড়ে দিয়েছে।

  • ব্যাংক ঋণ প্রাপ্তিতে সমস্যাঃ ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলো ব্যাংক থেকে প্রয়োজনীয় ঋণ পায় না। ব্যাংকগুলো এখনো ই-কমার্সকে প্রতিষ্ঠিত কোন খাত হিসেবে গণ্য করে না। ই-কমার্স খাতে অর্থায়নকে অনেক ব্যাংক ঝুঁকি মনে করে। প্রয়োজনীয় ঋণ না পাওয়ার কারণে ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলো আশানুরূপ তাদের ব্যবসা সম্প্রসারণ করতে পারছে না।

ই-কমার্সের সমস্যা সমাধানে কিছু সুপারিশ

  • ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলো যাতে তাদের পণ্য সহজে এবং দ্রুত গ্রাহকদের কাছে পাঠাতে পারে এজন্য যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন ঘটাতে হবে। পণ্য সরবরাহ ব্যবস্থা উন্নত করার জন্য সরকারকে নীতিমালা প্রণয়নসহ অন্যান্য সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত করার জন্য পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।

  • পেমেন্ট সিস্টেম আরও সহজ এবং নিরাপদ করতে সরকারকে উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। এক্ষেত্রে সাম্প্রতিক সময়ে পেমেন্ট সিস্টেম নিরাপদ করার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপ যথাযথভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে।

  • প্রতারক প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করে দেশে ই-কমার্সের জন্য সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে। অনেক গ্রাহক এসব প্রতারকের কারণে অনলাইনে কেনাকাটা করতে ভয় পায়। তাই সরকারকেই আস্থার পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে যা যা করতে হয় তার সবই করতে হবে।

  • ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলো যাতে সহজ শর্তে ব্যাংক ঋণ পায় এজন্য সরকার তথা বাংলাদেশ ব্যাংককে উদ্যোগ নিতে হবে।

  • ইন্টারনেটের প্রসারে সরকারকে পদক্ষেপ নিতে হবে। বাংলাদেশে বর্তমানে ইন্টারনেট সুবিধা শহরভিত্তিক। গ্রামাঞ্চলে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সুবিধা খুবই অপ্রতুল। এছাড়া মোবাইলের নেটওয়ার্কও গ্রামাঞ্চলে শক্তিশালী নয়। ইন্টারনেট সেবা যদি দেশব্যাপী যাতে ছড়িয়ে দেওয়া যায় তাহলে অনলাইন ক্রেতার সংখ্যা অনেক বেড়ে যাবে।

  • ক্রস বর্ডার ব্যবসার ক্ষেত্রে যেসব প্রতিবন্ধকতা আছে সেগুলো দূর করতে হবে। এজন্য সরকারকে নতুন আইন প্রণয়নসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। ক্রস বর্ডার ব্যবসায়ের সমস্যা সমাধান করতে পারলে তা আমাদের দেশের ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য বিদেশের বাজার ধরার এক বিরাট সুযোগের সৃষ্টি করবে। যা দেশের ই-কমার্স ব্যবসাকে অনন্য এক উচ্চতায় পৌঁছে দিবে।

  • বিদেশি কোম্পানিগুলোকে অবশ্যই নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। টেলিকম খাতের মত এই খাতকেও বিদেশিদের হাতে তুলে দেওয়া যাবে না। সম্প্রতি সরকার এ ব্যাপারে একটি নীতিমালা তৈরি করেছে। নীতিমালা অনুসারে বাইরের দেশের কোম্পানি ৫৯ শতাংশের বেশি শেয়ার ধারণ করতে পারবে না। এটা খুবই ইতিবাচক ব্যাপার। এই নীতিমালা যাতে সঠিকভাবে বাস্তবায়িত হয় সেজন্য সরকারকে আন্তরিকভাবে সচেষ্ট থাকতে হবে।

উপসংহার

ডিজিটাল ব্যবস্থায় প্রবেশ করার কারণে বাংলাদেশে ই-কমার্সের সম্ভাবনা অনেক বেড়ে গেছে। বর্তমানে যে হারে ই-কমার্সের প্রবৃদ্ধি হচ্ছে তাতে বলা যায় অদূর ভবিষ্যতে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নতিতে ই-কমার্স বিরাট ভূমিকা পালন করবে। এই খাত বাংলাদেশের বেকার সমস্যা সমাধানেও অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে। ই-কমার্স খাত যাতে সঠিকভাবে এগিয়ে যেতে পারে এজন্য বিদ্যমান সমস্যাসমূহ সমাধানে সরকারকে এগিয়ে আসতে হবে। এই খাতকে একটি সম্ভাবনায় খাত হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে প্রণোদনা প্রদানসহ সার্বিক সহযোগিতা নিশ্চিত করলে অবশ্যই তা দেশের অর্থনীতির জন্য সুফলদায়ক হবে।

বাংলাদেশ বিজনেস জার্নাল বাংলাদেশের প্রথম গবেষণাধর্মী একটি বিজনেস ব্লগ। আমরা উদ্যোক্তাদের ব্যবসা সম্পর্কিত বিভিন্ন আইডিয়া, পরিসংখ্যান এবং সম্ভাবনা সম্পর্কে পরামর্শ দিয়ে থাকি। আমাদের লেখা এবং পরামর্শ যদি উদ্যোক্তাদের ব্যবসায়িক সমৃদ্ধির পাথেয় হয়ে থাকে তাহলেই আমাদের পরিশ্রম সার্থক হয়েছে বলে আমাদের কাছে প্রতীয়মান হবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here