আমাদের মধ্যে অনেকের কাছে ব্যবসা শুরু করার মত পুঁজি আছে। কিন্তু ব্যবসার আইডিয়া সম্পর্কে জানাশোনার অভাবে ব্যবসা শুরু করতে পারি না। কিন্তু আপনি জানেন কি আপনার জন্য উপযুক্ত একটি ব্যবসার আইডিয়া আপনার জীবনকে বদলে দিতে পারে?
আপনার হয়তো টাকা, সময়, দক্ষতা এবং পরিশ্রম করার মন মানসিকতা আছে কিন্তু ব্যবসার আইডিয়া জানা না থাকার কারণে আপনি সামনে আগাতে পারছেন না।তাই যারা ব্যবসার আইডিয়া খুঁজছেন তাদের জন্য আজকের এই লেখা।
২০২১ সালে শুরু করতে পারবেন এরকম ৮০ টি লাভজনক ব্যবসার আইডিয়া
১. ক্যাটারিং ব্যবসা
আপনি কি রান্না করতে পছন্দ করেন? তাহলে আপনার জন্যই এই ক্যাটারিং ব্যবসা। শুধু রান্না করলেই হবে না রান্না অবশ্যই স্বাদের হতে হবে। কারণ স্বাদবিহীন খাবার রান্না করে আপনি গ্রাহক ধরে রাখতে পারবেন না।
ক্যাটারিং একটি লাভজনক ব্যবসার আইডিয়া। এই ব্যবসা শুরু করাও অনেক সহজ। রান্না করবেন আর গ্রাহকের কাছে সাপ্লাই দিবেন। এজন্য রান্নার সকল জিনিসপত্র থাকতে হবে। বড় পরিসরে ব্যবসা করতে চাইলে একটি রান্না ঘর এবং কিছু কর্মী প্রয়োজন যারা রান্নার কাজে সাহায্য করবে এবং খাবার ডেলিভারি দিবে। আপনার রান্না যদি খুব ভাল হয় তাহলে আপনি সহজেই গ্রাহক ধরে রাখতে পারবেন।
২. ট্রাভেল এজেন্সি ব্যবসা
আপনি যদি ভ্রমনপিপাসু মানুষ হয়ে থাকেন তাহলে আপনি একটি ট্রাভেল এজেন্সি দিতে পারেন। আমরা জানি যে দেশে পর্যটকের সংখ্যা বেড়েই চলছে। আর বেশিরভাগ পর্যটক ঝামেলা এড়ানোর জন্য ট্রাভেল এজেন্সির মাধ্যমে বেড়াতে পছন্দ করে। তাই ট্রাভেল এজেন্সির চাহিদা বেড়েই চলছে।
ট্রাভেল এজেন্সির খোলার আগে কিছু কাজ করতে হবে যেমন বেড়ানোর স্পট ঠিক করা, হোটেল এবং পরিবহন কোম্পানির সাথে চুক্তি করা। চুক্তি করা থাকলে আপনি বিভিন্ন ধরণের সুবিধা পাবেন যেমন সহজেই ছাড়ে হোটেল রুম পাওয়া এবং চাহিদা অনুযায়ী বাসের বা বিমানের টিকিট পাওয়া ইত্যাদি।
আরো পড়ুনঃ কিভাবে একটি ট্রাভেল এজেন্সি ব্যবসা শুরু করবেন | পূর্ণাঙ্গ গাইডলাইন
৩. বেকারি ব্যবসা
আমরা সবাই কমবেশি বেকারি পণ্য কিনে থাকি। বেকারি পণ্যের মধ্যে রয়েছে বিস্কিট, পাউরুটি, কেক ইত্যাদি। এই ব্যবসা শুরু করার জন্য আপনার একটি কারখানা লাগবে। বিভিন্ন ধরণের বেকারি পণ্য বানানোর জন্য কিছু দক্ষ শ্রমিক লাগবে। ভালভাবে পরিচালনা করতে পারলে এটি একটি লাভজনক ব্যবসায় পরিণত হবে।
আরো পড়ুনঃ বেকারি ব্যবসা শুরু করবেন কিভাবে? আদ্যোপান্ত জানুন
৪. ডিলারশিপ ব্যবসা
আপনারা প্রায়ই পত্রিকায় দেখে থাকবেন অমুক কোম্পানির ডিলারশিপ নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। সেই বিজ্ঞাপনে কতগুলো শর্ত দেওয়া থাকে। কেউ যদি ডিলারশিপের জন্য আবেদন করতে চায় তাহলে তাকে সেসব শর্ত পূরণ করতে হবে।
একেক কোম্পানির শর্ত একেক রকম। তবে শর্তগুলো কাছাকাছি হয়ে থাকে। যেমন আপনার গোডাউন বা শোরুম থাকতে হবে। কমার্শিয়াল এরিয়াতে অবস্থান হতে হবে। ট্রেড লাইসেন্স, ব্যাংক অ্যাকাউন্টসহ বিভিন্ন শর্ত দিয়ে থাকে। আপনি যদি শর্ত পূরণ করে ডিলারশিপ নিতে পারেন তাহলে আপনার জন্য ভাল হবে কারণ এই ব্যবসা অনেকটা ঝুঁকিমুক্ত এবং লাভজনক ব্যবসা।
আরো পড়ুনঃ ১৫ টি লাভজনক ডিলারশিপ ব্যবসার আইডিয়া
৫. অনলাইনে পোশাক বিক্রি
এটি একটি লাভজনক ব্যবসার আইডিয়া। আজকাল অনেকেই বিশেষ করে নারী উদ্যোক্তারা অনলাইনে পোশাক বিক্রি করে স্বাবলম্বী হচ্ছে।
অনলাইনে পোশাক বিক্রি করার জন্য আপনার ফেসবুকে একটি পেইজ থাকতে হবে। সেই পেইজের মাধ্যমে আপনি আপনার গ্রাহকদের সামনে পোশাকের সকল গুনাগুণ তুলে ধরবেন। আপনি যদি সুন্দরভাবে সবকিছু উপস্থাপনা করতে পারেন তাহলে অবশ্যই অনেক গ্রাহক পাবেন।
আরো পড়ুনঃ অল্প পুঁজিতে ২৫ টি আকর্ষণীয় ব্যবসার আইডিয়া
৬. পোষা প্রাণীর ব্যবসা
মানুষের আয় বাড়ার সাথে সাথে মানুষের মধ্যে সৌখিন বিষয়ের প্রতি আগ্রহ বাড়ে। শখের বসে অনেকেই বাড়িতে বিভিন্ন পোষা প্রাণী পালে। বাংলাদেশে এই পোষা প্রাণীর মার্কেট ধীরে ধীরে বড় হচ্ছে।
বিভিন্ন ধরণের প্রাণী বিক্রি করতে পারেন, যেমন কুকুর, বিড়াল, খরগোশ, কবুতর ইত্যাদি। এসব ব্যবসা যথেষ্ট লাভজনক। তবে সব যায়গায় এসব ব্যবসা চলবে না। আর্থিকভাবে সচ্ছল এরিয়াতে এসব ব্যবসা খুব ভাল চলবে। তবে আপনি ইচ্ছা করলে অনলাইনেও এই ব্যবসা করতে পারবেন।
৭. ফিড মিল
ফিড মিল একটি লাভজনক উৎপাদন ব্যবসার আইডিয়া। কারণ দেশে এখন মাছ, মুরগির, গবাদিপশুর খামারের সংখ্যা বেড়েই চলছে। যার ফলে মাছ, মুরগী, গবাদিপশুর খাবারের প্রচুর চাহিদা।
ফিড মিলের জন্য আপনার কয়েক একরের একটি যায়গা লাগবে। সেখানে অফিস, গুদামঘরসহ অন্যান্য স্থাপনা থাকবে। মিলের কাঁচামাল প্রক্রিয়াজাতকরণের জন্য আপনার মেশিন লাগবে। এসব মেশিন বেশিরভাগ বিদেশ থেকে আমদানি করতে হয়। যায়গা, যন্ত্রপাতিসহ সবকিছু মিলে আপনাকে বড় অংকের অর্থ বিনিয়োগ করতে হবে।
আরো পড়ুনঃ ফিড মিল ব্যবসা শুরু করবেন কিভাবে?
৮. মুরগীর খামার
এই ব্যবসা শুরু করার আগে আপনাকে এই ব্যবসা সম্পর্কে খুব ভালভাবে জেনে নিতে হবে। মুরগীর খামার কিভাবে তৈরি করতে হয় এবং কি পরিমাণ অর্থের প্রয়োজন সেগুলো জেনে নিতে হবে। এর পাশাপাশি মুরগীর রোগবালাই এবং টিকা এসব সম্পর্কে যথেষ্ট ধারণা থাকতে হবে। কারণ এসব বিষয়ে না জানলে আপনি কখনো এই ব্যবসায় সফল হতে পারবেন না। আপনি বুঝতেও পারবেন না হঠাৎ কোন একটা ভাইরাসের আক্রমণে সব মুরগী মরে যাবে। তাই সবসময় সতর্ক থাকতে হবে এবং ডাক্তারদের পরামর্শ অনুযায়ী মুরগীর যত্ন নিতে হবে।
৯. গরুর খামার
ভারত থেকে কোরবানির গরু আসা বন্ধ করে দেওয়ার পর থেকে বাংলাদেশে গরুর খামার করার প্রতি উদ্যোক্তাদের আগ্রহ অনেক বেড়ে যায়। কারণ প্রতি বছর আমাদের দেশে প্রায় ৭০-৮০ লাখ গরুর প্রয়োজন। এতদিন ভারতের গরু দিয়ে একটা বড় অংশ পূরণ করা হতো।
গরুর খামার যথেষ্ট লাভজনক ব্যবসা। মুরগীর খামারের মত গরুর খামার করার আগে গরু লালন পালন সংক্রান্ত বিষয়াদি খুব ভাল করে জেনে নিবেন যাতে ভবিষ্যতে কোন সমস্যায় না পড়েন।
১০. হাঁসের খামার
হাঁসের খামার একটি লাভজন গ্রামের ব্যবসার আইডিয়া। অন্যান্য গবাদিপশুর তুলনায় হাঁস পালা তুলনামূলক সহজ। এদেরকে আপনি যদি নদী বা হাওরেও ছেড়ে দেন ওরা দল বেধে সাঁতার কাটবে আর খাবার সংগ্রহ করে খাবে।
হাঁসের খামার করতে হলে অবশ্যই ভাল জাতের হাঁস নির্বাচন করতে হবে। হাঁসের ঘর খোলামেলা হতে হবে। ঘরের চারপাশে জলাধার থাকলে খুব ভাল। হাঁসের প্রজনন যাতে সঠিকভাবে হয় সেজন্য খামারে হাঁস এবং হাঁসার পরিমাণ ১০ঃ১ হতে হবে।
১১. ছাগলের খামার
ছাগল লালন পালনের নিয়ম জানা থাকলে একটি ছাগলের খামার দিয়ে আপনি স্বাবলম্বী হতে পারবেন। ছাগল পালন করার জন্য প্রাথমিকভাবে আপনার পুঁজি লাগবে বেশি। এদের বাসস্থানের যায়গা একটু বেশি রাখতে হয় আর খাবারের পরিমাণও বেশি লাগে।
একটি ছাগল খাসি ১২-১৫ থেকে মাসের মধ্যে ১৫-২০ কেজি পর্যন্ত ওজনের হয়ে থাকে। খাসির মাংসের দামও বেশি তাই এটি যথেষ্ট লাভজনক।
১২. ফটোকপি/ মোবাইল ব্যাংকিং/ অনলাইন সেবা ব্যবসা
রাস্তায় বের হলেই এই দোকানগুলো খুব বেশি দেখা যায়। একই দোকানে বিভিন্ন সেবা। আপনি যদি একই সাথে ফটোকপি, ফ্লেক্সিলোড, মোবাইল ব্যাংকিং, অনলাইন আবেদনসহ সব সেবা দিতে চান তাহলে আপনার দোকানে আপনি ছাড়াও আরও কমপক্ষে দুজন লোক লাগবে।
আপনি যদি একা সব খরচ বহন করতে না পারেন তাহলে পার্টনারশিপে ব্যবসা করতে পারেন। আপনার সাথে দুজনকে নিয়ে যদি একটি দোকান দেন তাহলে খরচ অনেক কম হবে।
১৩. ইন্টেরিয়র ডিজাইন ব্যবসা
ইন্টেরিয়র ডিজাইন ব্যবসা একটি সৃজনশীল ব্যবসার আইডিয়া। আপনি যদি দক্ষ ডিজাইনার হয়ে থাকেন তাহলে আপনি ইন্টেরিয়র ডিজাইন ব্যবসা শুরু করতে পারেন।
ইন্টেরিয়র ডিজাইনারদের বর্তমানে খুব চাহিদা। সৌখিন মানুষ তাদের ঘর সাজানোর জন্য ইন্টেরিয়র ডিজাইনারদের নিয়োগ দেয়। এছাড়া অফিস, কমিউনিটি সেন্টার, হোটেল, রেস্তোরাঁ ইত্যাদি সাজানোর কাজ ইন্টেরিয়র ডিজাইনারদের দেওয়া হয়। তাই আপনার যদি এই ব্যবসায় আগ্রহ থাকে তাহলে কিছু দক্ষ ডিজাইনার নিয়ে ব্যবসায় নেমে যান।
১৪. ফুলের ব্যবসা
বাংলাদেশে ফুলের বাজার বেড়েই চলছে। বাংলাদেশ ফ্লাওয়ার সোসাইটির তথ্য মতে বাংলাদেশে ফুলের বাজার ১৬ হাজার কোটি টাকার উপর। বিভিন্ন উপলক্ষ যেমন আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস, ভালবাসা দিবসসহ বিভিন্ন দিবসে ফুলের বিক্রি ব্যাপক হারে বেড়ে যায়।
একটি দোকান নিয়েই আপনি এই ব্যবসা শুরু করতে পারেন। আবার কৃষকদের কাছ থেকে সরাসরি কিনে বিভিন্ন দোকানে সাপ্লাই দিতে পারেন।
১৫. আমদানি-রফতানি ব্যবসা
এটি খুবই লাভজনক একটি ব্যবসার আইডিয়া। তবে সবাই এই ব্যবসা করতে পারবে না। কারণ এই ধরণের ব্যবসা করার জন্য আপনার অনেক পুঁজি লাগবে। এছাড়া বিদেশে বিক্রেতার সাথে যোগাযোগের ব্যাপার আছে। আপনার প্রতিষ্ঠিত ব্যবসা না থাকলে অনেক বিক্রেতা আপনার কাছে পণ্য বিক্রি করতে চাইবে না আবার আপনিও রপ্তানি করতে পারবেন না।
বিদেশ থেকে পণ্য আমদানি করার জন্য বা বিদেশে রপ্তানির জন্য আপনার লাইসেন্স থাকতে হবে। পণ্য আমদানি-রপ্তানি করার জন্য এলসি করা থেকে শুরু করে সকল ডকুমেন্ট নিয়ম অনুযায়ী তৈরি করা এবং জমা দেওয়ার বিষয়গুলো সম্পর্কে ভাল করে জেনে নিতে হবে।
আরো পড়ুনঃ আমদানি-রপ্তানি ব্যবসা কিভাবে শুরু করবেন তার গাইডলাইন
১৬. ই-কমার্স ব্যবসা
বর্তমান যুগ হচ্ছে ই-কমার্সের যুগ। ইন্টারনেটের প্রসারের কারণে ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলো দ্রুত বিকশিত হচ্ছে। গ্রাহকরাও এখন কষ্ট করে মার্কেটে যেতে চায় না। ঘরে বসে অনলাইনে কেনাকাটা করতে চায়।
একটি ওয়েবসাইট আর ফেসবুক পেইজ থাকলেই আপনি ই-কমার্স ব্যবসা শুরু করতে পারবেন। তবে ই-কমার্স ব্যবসা কিভাবে শুরু করবেন সে বিষয়ে অবশ্যই জেনে নিবেন। ভাল করে না জেনে এই ব্যবসা শুরু করলে আপনি সফল হবেন না। ই-কমার্স ব্যবসা কি? কিভাবে ই-কমার্স ব্যবসা শুরু করবেন? এই আর্টিকেলে বিস্তারিত সবকিছু পাবেন।
১৭. ব্লগ বিজনেস
ব্লগ বিজনেস বাংলাদেশের জন্য একটি নতুন ব্যবসার আইডিয়া। অল্প পুঁজিতে যারা ব্যবসা শুরু করতে চান তাদের জন্য ব্লগ বিজনেস। কিন্তু এটা ঠিক পরবর্তীতে একটি ব্লগ মনিটাইজ করতে অনেক অর্থ ব্যয় করতে হয়। ব্লগের মাধ্যমে আপনি আপনার ব্যবসায়ের পণ্য গ্রাহকদের কাছে প্রমোট করতে পারবেন।
ব্লগের মাধ্যমে আপনি অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে অন্য কোম্পানির পণ্য বিক্রি করে কমিশন লাভ করতে পারবেন না। ব্লগের মাধ্যমে আপনি কোর্স তৈরি করে বিক্রি করতে পারবেন। মোট কথা একটি ব্লগ হচ্ছে একটি ব্যবসা।
১৮. ডিজিটাল মার্কেটিং এজেন্সি
ডিজিটাল মার্কেটিং হচ্ছে ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে টার্গেট গ্রাহকদের কাছে পণ্যের বিজ্ঞাপন পৌঁছে দিয়ে প্রতিষ্ঠানের পণ্যের বিক্রির ব্যবস্থা করা। ডিজিটাল মার্কেটিং এর পদ্ধতিগুলো হচ্ছে – সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন, কনটেন্ট মার্কেটিং, সোসাল মিডিয়া মার্কেটিং, সার্চ ইঞ্জিন মার্কেটিং, ইমেইল মার্কেটিং, এসএমএস মার্কেটিং, ওয়েব এনালাইটিক্স ইত্যাদি।
আপনি যদি একজন দক্ষ ডিজিটাল মার্কেটার হয়ে থাকেন তাহলে আপনি এই ব্যবসা শুরু করতে পারেন। একটি অফিস ভাড়া করবেন আর ডিজিটাল মার্কেটিং এ দক্ষ কিছু কর্মী নিয়ে খুব সহজেই এই ব্যবসা শুরু করতে পারেন।
১৯. সফটওয়ার/অ্যাপ ডেভেলপমেন্ট
পৃথিবীতে সফটওয়ার/অ্যাপের বিলিয়ন ডলারের বাজার। Grandview research এর মতে ২০২০ সালে সফটওয়ারের বাজারের আকার ছিল ৩৮৯.৮৬ বিলিয়ন ডলারের। prnewswire.com এর তথ্য মতে ২০২১-২৫ সালের মধ্যে মোবাইল অ্যাপের মার্কেট ৬৫৩.৯১ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছাবে। অর্থাৎ প্রতি বছর ২১% হারে বৃদ্ধি পাবে।
তাহলে বুঝতেই পারছেন এই খাতে কত সম্ভাবনা। আপনি যদি একজন সফটওয়্যার বা অ্যাপ নির্মাতা হয়ে থাকেন তাহলে এই ব্যবসা শুরু করে দিতে পারেন।
২০.ওয়ার্ডপ্রেস থিম ডেভেলপমেন্ট
বর্তমানে ওয়েবসাইট তৈরির সবচেয়ে জনপ্রিয় সিএমএস প্লাটফর্ম হচ্ছে ওয়ার্ডপ্রেস। পৃথিবীতে মোট ওয়েবসাইটের ৩০ শতাংশের উপর ওয়েবসাইট তৈরি করা হয়েছে ওয়ার্ডপ্রেস প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে। তারমানে ওয়ার্ডপ্রেসের রয়েছে বিশাল মার্কেট। আর ওয়ার্ডপ্রেসে কোন ওয়েবসাইট তৈরি করার জন্য প্রয়োজন একটি থিম। যে থিমের ইন্টারফেস যত সুন্দর এবং ব্যবহারকারী বান্ধব সেই থিমের বিক্রি বেশি। তাই এই বিশাল বাজার ধরতে আপনিও শুরু করতে পারেন থিম ডেভেলপমেন্ট বিজনেস।
২১. ওয়েবসাইট ডেভেলপমেন্ট বিজনেস
Internetlivestats এর তথ্য মতে পৃথিবীতে ১.৫ বিলিয়নের বেশি ওয়েবসাইট আছে। যার পরিমাণ প্রতিনিয়ত বেড়েই চলছে। আমাদের দেশেও ওয়েবসাইট তৈরির পরিমাণ বেড়েই চলছে। এখন ছোট বড় প্রায় সব প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইট আছে। ব্যক্তি পর্যায়ে অনেকেই এখন ওয়েবসাইট তৈরি করছে।
আপনি যদি একজন ওয়েবসাইট ডেভেলপার হয়ে থাকেন তাহলে কিছু ডেভেলপারকে সাথে নিয়ে ওয়েবসাইট তৈরির ব্যবসা প্রতিষ্ঠান দিতে পারেন। ওয়েবসাইট তৈরির পাশাপাশি হোস্টিং ব্যবসায়ও করতে পারবেন।
২২. ভিডিও গেইম তৈরি
Techjury এর মতে ২০২০ সালে পৃথিবীতে ভিডিও গেইমের মার্কেট ছিল ৯০ বিলিয়ন ডলার। তারমানে বিশাল এক মার্কেট। দিন দিন এই মার্কেটের আকার বাড়ছে। তাই গেইম ডেভেলপারদের জন্য এটা ব্যবসার একটা বড় সুযোগ। তাই আপনি যদি গেইম ডেভেলপার হয়ে থাকেন তাহলে শুরু করে দিন এই ব্যবসা।
২৩. কম্পিউটার সামগ্রীর দোকান
যেসব এলাকায় শিক্ষিত এবং সচ্ছল মানুষ বেশি সেসব এলাকায় কম্পিউটার সামগ্রীর দোকান দিতে পারেন। এটি একটি লাভজনক ব্যবসা। তবে কম্পিউটারের সামগ্রীর দাম যেহেতু বেশি তাই এই ব্যবসা শুরু করতে হলে আপনাকে ২-৪ লাখ টাকা বিনিয়োগ করতে হবে। তবে দোকানের আয়তন বেশি হলে আর সামগ্রীর পরিমাণ বেশি হলে আরও অনেক বেশি বিনিয়োগ করতে হবে।
২৪. কম্পিউটার ট্রেনিং সেন্টার
যারা কম্পিউটার সম্পর্কে ভাল জ্ঞান রাখেন তাদের জন্য এই ব্যবসার আইডিয়া।
বর্তমান যুগে কম্পিউটার চালাতে জানা খুবই জরুরী। সরকারী বা বেসরকারি যে চাকরিই করেন না কেন কম্পিউটার চালাতে জানতে হবে। এজন্য কম্পিউটার প্রশিক্ষণ সেন্টারের চাহিদাও বাড়ছে। আপনি যে বিষয়ে এক্সপার্ট সে বিষয়ে একটি ট্রেনিং সেন্টার খুলতে পারেন। আপনি একা সব বিষয়ে জানবেন সেটা সম্ভব নয়। তাই বিভিন্ন অ্যাপ্লিকেশনে এক্সপার্ট কিছু লোক সাথে নিয়ে নিবেন।
২৫. প্রুফরিডিং ব্যবসা
প্রতিদিন হাজার হাজার ওয়েবসাইট কন্টেন্ট তৈরি হচ্ছে। এছাড়া লেখকরা বিভিন্ন বিষয়ের উপর বই লিখছেন। কিন্তু এসব লেখা নির্ভুল করার জন্য প্রুফরিডারদের প্রয়োজন। প্রুফরিডারদের কাজ হচ্ছে বানান এবংব্যাকরণ ঠিক আছে কিনা তা পরীক্ষা করে দেখা এবং ভুল হলে সংশোধন করা।
এই ব্যবসা করার জন্য এমন কিছু কর্মী প্রয়োজন যারা খুব মনোযোগের সাথে একটানা পড়তে পারে। বানান এবং ব্যাকরণ সম্পর্কে খুব ভাল জ্ঞান আছে।
২৬. এফ-কমার্স
এফ-কমার্স হচ্ছে ফেসবুক কমার্স। ফেসবুক কমার্স বর্তমানে খুব জনপ্রিয় একটি নাম। বাংলাদেশে হাজারো মানুষ এফ-কমার্স এর মাধ্যমে প্রচুর আয় করছে। ই-ক্যাব এর তথ্য মতে বাংলাদেশে প্রায় ২০ হাজার ফেসবুক পেইজের মাধ্যমে উদ্যোক্তারা তাদের ব্যবসা পরিচালনা করছে। বিশেষ করে নারী উদ্যোক্তারা ফেসবুক গ্রুপ এবং পেইজের মাধ্যমে তাদের ব্যবসাকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। কম খরচে ব্যবসা করার জন্য ফেসবুক হচ্ছে সবচেয়ে কার্যকর মাধ্যম।
২৭. অনলাইনে কোর্স বিক্রি
অনলাইনে কোর্স বিক্রি একটি স্মার্ট ব্যবসার আইডিয়া। অনেকেই এখন অনলাইনে কোর্স বিক্রি করে অনেক আয় করছে। বহুব্রীহি এমন একটি প্লাটফর্ম। এরা বিভিন্ন বিষয়ের উপর ভিডিও তৈরি করছে এবং তাদের ওয়েবসাইটের মাধ্যমে গ্রাহকদের কাছে বিক্রি করছে।
আপনি যদি কোন বিষয়ে খুব দক্ষ হয়ে থাকেন তাহলে সেসব বিষয়ে ভিডিও তৈরি করে অনলাইনে বিক্রি করতে পারেন। এছাড়া আপনি কোর্স তৈরি করে udemy নামের এই ওয়েবসাইটে বিক্রি করে আয় করতে পারবেন।
২৮. আর্টিকেল রাইটিং সার্ভিস
প্রতিদিন ওয়েবসাইটগুলোতে লাখ লাখ আর্টিকেল প্রকাশিত হয়। এই আর্টিকেলের একটা বড় অংশ বিভিন্ন আর্টিকেল রাইটিং এজেন্সির লেখকরা লিখে থাকে। আপনি যদি ভাল আর্টিকেল রাইটার হয়ে থাকেন তাহলে আপনি এই ব্যবসা শুরু করতে পারেন। এই ব্যবসা শুরু করার আগে ভাল কিছু রাইটার সংগ্রহ করে নিন। এ ধরণের ব্যবসার জন্য অফিস না হলেও কোন সমস্যা নেই। বাসায় বসে অনলাইনে এই ব্যবসা পরিচালনা করা যায়।
২৯. ভার্চুয়াল এসিসট্যান্ট
ভার্চুয়াল এসিসট্যান্টদের কাজ হচ্ছে দূর থেকে কোন প্রতিষ্ঠানের পক্ষ হয়ে কাজ করা। ভার্চুয়াল এসিসট্যান্টরা অফিসের প্রশাসনিক কাজ থেকে শুরু করে ফাইল তৈরি, মিটিং এর আয়োজন, কোম্পানির ক্লায়েন্টদের সাথে যোগাযোগ করাসহ বিভিন্ন ধরণের কাজ করে থাকে।
আজকাল এই ধরণের প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা বেড়ে চলছে। এই ধরণের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান দিতে হলে স্মার্ট এবং দক্ষ কিছু কর্মীর প্রয়োজন হবে। বাংলা এবং ইংলিশ উভয় ভাষাতে সাবলীল থাকতে হবে। আপনি যদি ক্লায়েন্টদের ভাল সার্ভিস দিতে পারেন তাহলে আপনার গ্রাহকের অভাব হবে না।
৩০. সুপার শপ
সুপার শপে সাধারণত সব ধরণের পণ্য পাওয়া যায়। সুপার শপ ব্যবসা দিতে গেলে আপনার বড় ধরণের বিনিয়োগের প্রয়োজন হবে। সুপার শপ ব্যবসা অবশ্যই আর্থিকভাবে সচ্ছল এবং জমজমাট এলাকায় দিতে হবে।কারণ এই ধরণের শপ দেওয়ার জন্য যে পরিমাণ বিনিয়োগ করতে হয় তা শুধুমাত্র প্রচুর বিক্রি করতে পারলে উঠিয়ে আনা সম্ভব।
৩১. ভিডিওগ্রাফি ব্যবসা
অল্প পুঁজিতে শুরু করা যায় এমন একটি ব্যবসার আইডিয়া হচ্ছে ভিডিওগ্রাফি ব্যবসা।
বিয়ের অনুষ্ঠান, জম্নদিন, বিভিন্ন পার্টিতে ভিডিওগ্রাফারদের ভাড়া করে আনতে হয়। এজন্য স্থানভেদে বিভিন্ন পরিমাণে ফি প্রদান করতে হয়।
আপনি যদি একজন ভাল ভিডিওগ্রাফার হয়ে থাকেন তাহলে আপনি এই ব্যবসা শুরু করতে পারেন। ভিডিওগ্রাফি ব্যবসা শুরু করার জন্য আপনার অবশ্যই ভাল ক্যামেরা লাগবে। এছাড়া আরও কিছু প্রাসঙ্গিক জিনিস লাগবে যেমন লেন্স, ট্রাইপড, লাইট, কম্পিউটার, ফটো এডিটিং সফটওয়্যার ইত্যাদি।
৩২. ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট বিজনেস
ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট একটি স্মার্ট ব্যবসার আইডিয়া। যাদের ইন্টারপার্সোনাল স্কিল আছে এবং সৃজনশীল চিন্তাভাবনার অধিকারী ব্যক্তিদের জন্য এই ব্যবসা। এই ব্যবসা শুরু করার জন্য আপনার একটি অফিস প্রয়োজন এবং কিছু উদ্যমী এবং স্মার্ট ব্যক্তি প্রয়োজন যারা আপনাকে সার্বিক সহযোগিতা করবে।
ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট ব্যবসা করার জন্য আপনাকে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রাখতে হবে। কারণ ইভেন্ট ম্যানেজমেন্টের দায়িত্বগুলো সাধারণত অভ্যন্তরীণভাবে প্রদান করা হয়।
৩৩. ডেইরি ফার্ম
ডেইরি ফার্ম একটি লাভজনক ব্যবসার আইডিয়া। তবে এই ব্যবসায় নামার আগে অবশ্যই গরু পালন সংক্রান্ত বিষয়াদি জেনে নিবেন। দুধ দোহন পদ্ধতি এবং সংরক্ষণ পদ্ধতি সম্পর্কে ভাল জ্ঞান থাকতে হবে।
এই ব্যবসা শুরু করার জন্য আপনার কয়েকটা গাভি লাগবে এবং সেগুলো রাখার জন্য গোয়াল ঘর লাগবে।
গোয়াল ঘর ৩০ ফিট বাই ১৫ ফিট হওয়া উচিৎ। আলো-বাতাস যাতে আসে সেই ব্যবস্থা রাখতে হবে। লাইট ফ্যানের ব্যবস্থা রাখতে হবে। প্রচুর দুধ দেয় এমন জাতের গাভী কিনবেন। প্রচুর দুধ দেয় এরকম গাভীর মূল্য হতে পারে ১.৫ লাখ টাকার মত। আপনি কতগুলো গাভী নিয়ে ব্যবসা শুরু করতে চান তার উপর এই ব্যবসার খরচ নির্ভর করবে।
৩৪. প্রিন্ট অন ডিমান্ড বিজনেস
আপনারা লক্ষ করলে দেখে থাকবেন টিশার্ট, ক্যাপ, মগ, ব্যাগ ইত্যাদির উপর বিভিন্ন ধরণের ডিজাইন করা থাকে। এসব ডিজাইন করার জন্য ডিজাইনারদের দায়িত্ব দেওয়া হয়। প্রতিটি ডিজাইনের জন্য একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ ফি প্রদান করা হয়।
আপনিও যদি একজন ডিজাইনার হয়ে থাকেন তাহলে আপনি এই ব্যবসা শুরু করতে পারেন।টিশার্ট, ক্যাপ, মগ, ব্যাগ ইত্যাদির উপর ডিজাইন করার জন্য কিছু মেশিন প্রয়োজন যেগুলো আপনাকে কিনতে হবে। আর আপনাকে সহযোগিতা করার জন্য কিছু দক্ষ কর্মীর প্রয়োজন হবে।
৩৫. স্টার্টআপ বিজনেস
স্টার্টআপ ব্যবসা হচ্ছে নতুন কোন আইডিয়া নিয়ে সেটা ব্যবসায় রুপ দেওয়া। এই ব্যবসাগুলো ইন্টারনেটভিত্তিক হয়ে থাকে। যেমন আমাদের দেশে পাঠাও কোম্পানির কথাই বলা যায়। তারা একটি নতুন আইডিয়া নিয়ে আমাদের দেশে রাইড শেয়ারিং ব্যবসা করেছে । এটা একটা স্টার্ট আপ।
Airbnb পৃথিবীর অন্যতম সফল স্টার্টআপ কোম্পানি। এদের মূল ব্যবসা হচ্ছে পর্যটকদের মানুষের বাসায় গেস্ট হিসেবে থাকার ব্যবস্থা করা। যারা গেস্ট রাখবে তারা গেস্টের কাছ থেকে নির্দিষ্ট অংকের ভাড়া এবং সার্ভিস চার্জ পাবে।
তাই আপনার কাছে যদি নতুন কোন আইডিয়া থাকে তাহলে আপনি একটি স্টার্টআপ ব্যবসা শুরু করতে পারেন। নতুন আইডিয়া পাওয়ার সবচেয়ে ভাল উপায় হচ্ছে মানুষের সমস্যা নিয়ে ভাবুন। এসব সমস্যা সমাধান করতে গিয়েই আপনি নতুন ব্যবসার আইডিয়া পেয়ে যাবেন।
৩৬. চা/কফি শপ
এই ধরণের ব্যবসা অল্প পুঁজি নিয়ে শুরু করা যায়। একটি ছোট দোকান নিয়েও আপনি চা বা কফির ব্যবসা শুরু করতে পারেন। দোকানের ভেতরটা সুন্দর করে সাজাবেন যাতে গ্রাহকরা আকর্ষিত হয়। চা/কফির সাথে ফাস্টফুডের ব্যবস্থাও রাখতে পারেন তাহলে আপনার মুনাফার পরিমাণ বেশি হবে।
৩৭. কাঁচাবাজার ডেলিভারি ব্যবসা
আজকাল মানুষ অনেক ব্যস্ত হয়ে গেছে। অনেক পরিবার আছে যাদের স্বামী স্ত্রী দুজনই চাকরি করে। অনেক পরিবার আছে যাদের বাজারে যাওয়ার মত লোক নেই। এসব পরিবার টার্গেট করে আপনি শুরু করতে পারেন কাঁচাবাজার ডেলিভারি ব্যবসা। প্রতিদিন সকালে কাঁচাবাজার সংগ্রহ করে একটি ভ্যান বা ছোট ট্রাকে করে বাসায় বাসায় সাপ্লাই দিতে পারেন।
৩৮. বেবি কেয়ার সেন্টার
চাকরিজীবী মায়েদের সন্তান দেখাশুনা করা একটা বড় চ্যালেঞ্জের বিষয়। কারণ বাসায় যদি কেউ না থাকে তাহলে সন্তান বাসায় রেখে চাকরি করা তাদের জন্য অসম্ভব হয়ে যায়। তাই এসব পরিবারের বাবা-মাদের জন্য বেবি কেয়ার সেন্টার হচ্ছে একমাত্র সমাধান। আর স্বামী স্ত্রী দুজনই চাকরি করে এরকম চাকরিজীবী পরিবারের সংখ্যা বেড়েই চলছে।
তাই যেসব এলাকায় চাকরিজীবী মানুষের সংখ্যা বেশি সেসব এলাকায় এই ব্যবসা শুরু করতে পারেন। শিশুদের খেলনা আর তাদের দেখাশুনা করার জন্য কিছু মহিলা নিয়োগ দিয়ে একটি রুম ভাড়া নিয়ে বা নিজের বাড়িতেও এই ব্যবসা শুরু করতে পারেন।
৩৯. খাবার ডেলিভারি অ্যাপ
বর্তমানে এটি একটি কমন ব্যবসা। তবে এটি লাভজনকও। কারণ প্রতিটি ডেলিভারিতে আপনি যে ফি নিবেন তাতে আপনি ভাল পরিমাণে আয় করতে পারবেন।
এই ধরণের ব্যবসা করতে হলে আপনার একটি অ্যাপ লাগবে। সেই অ্যাপে বিভিন্ন কোম্পানির খাবারের লিস্ট থাকবে। তারপর গ্রাহকরা সেসব খাবার অর্ডার করলে আপনি আপনার কর্মীদের দিয়ে পৌঁছে দিবেন। এসব অ্যাপের মাধ্যমে বিভিন্ন ভাবে আয় করা যায়। যেমন যেসব ব্যবসা প্রতিষ্ঠান আপনাকে বেশি পে করবে তাদের পণ্য প্রথমদিকে প্রদর্শন করবেন। তারপর গ্রাহকদের সাবস্ক্রিপশন সিস্টেম চালু করতে পারেন, যারা সাবস্ক্রাইবার হবে তারা নির্দিষ্ট খাবারে ছাড় পাবে।
৪০. প্যাকেটজাত মাংসের ব্যবসা
সারা বিশ্বেই প্যাকেটজাত মাংসের চাহিদা বাড়ছে। কারণ এসব মাংস এমনভাবে প্রক্রিয়াজাতকরণ করা হয় যার কারণে বাসায় এনে নতুন করে কাটাকাটি করার ঝামেলা করতে হয় না।
এই ব্যবসা শুরু করার জন্য আপনার একটি কসাইখানা লাগবে এবং গোশত প্রক্রিয়াজাতকরণের জন্য একটি ফ্যাক্টরি লাগবে। এই ধরণের ব্যবসা করলে হলে আপনাকে বড় ধরণের বিনিয়োগ করতে হবে। কারণ কারখানা স্থাপন, কাঁচামাল, মেশিন এবং মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনা এসবের পেছনে অনেক অর্থ ব্যয় করতে হবে।
৪১. মুদি দোকান
সল্প পুঁজিতে একটি মুদি দোকান দেওয়া যায়। এলাকাভেদে খরচের পার্থক্য হয়ে থাকেন। কোন এলাকায় আপনি ১৫-২০ হাজার টাকা দিয়েও মুদি দোকান দিতে পারবেন। কোন এলাকায় মুদি দোকান দিতে লাখ টাকা লাগবে। দোকানের ডেকোরেশন এবং কি পরিমাণ মাল দোকানে উঠাবেন তার উপর খরচ নির্ভর করে।
৪২. মাছের ব্যবসা
যারা পুকুরে মাছ চাষ করে বা নদী সাগরে মাছ ধরতে যায় তাদের জন্য এই ব্যবসা। তবে আপনার মাছের ঘের না থাকলেও আপনি মধ্যসত্ত্বভোগী হিসেবে মাছের ব্যবসা করতে পারেন। মাছের পাইকারি বাজার থেকে মাছ কিনে বিভিন্ন এলাকার বাজারে সাপ্লাই দিতে পারেন। এসব ব্যবসায় প্রচুর লাভ। আপনি মাছ কিনে ট্রাক দিয়ে বিভিন্ন অঞ্চলের বাজারে সাপ্লাই দিবেন আর আয় করবেন। এই ধরণের ব্যবসা করার জন্য একটি ট্রাক থাকলে খুব ভাল। তাহলে ট্রাক ভাড়ার খরচটা বেঁচে যাবে।
আর নিজের এলাকায় সাপ্লাই দিলে নসিমন-করিমন বা ব্যাটারি রিকশা দিয়েও মাছ সরবরাহের কাজ করতে পারবেন।
৪৩. আড়তের ব্যবসা
আড়তের ব্যবসা করার জন্য আপনাকে অবশ্যই একটা বড় যায়গা ভাড়া নিতে হবে। নিজের ব্যক্তিমালিকানায় হলে তো কথাই নেই। আড়তগুলো সাধারণত বাজারের মত জমজমাট এলাকায় থাকে।এই ধরণের ব্যবসা অনেক লাভজনক। আড়তদাররা একসাথে প্রচুর পরিমাণে পণ্য ক্রয় করে থাকে এবং বিক্রিও করে থাকে পাইকারদের কাছে। আপনি যদি কতগুলো বড় গ্রাহককে নিয়মিত গ্রাহক বানাতে পারেন তাহলে এই ব্যবসায় আপনি সহজে ক্ষতির সম্মুখীন হবেন না।
৪৪. চামড়ার ব্যবসা
একটা সময় ছিল যখন গবাদি পশুর চামড়ার অনেক মূল্য ছিল। মাঝারি আকারের একটা গরুর চামড়ার দাম ছিল ১৫০০ থেকে ১৮০০ টাকা। বড় আকারের গরুর চামড়ার মূল্য ছিল ২৫০০ টাকার উপরে। তখন চামড়ার ব্যবসা করে মৌসুমি ব্যবসায়ীসহ আড়তদাররাও অনেক লাভ করেছে। কিন্তু সেই দিন আর নেই। ট্যানারি মালিকদের কারসাজিতে চামড়ার মূল্যে ব্যাপক ধ্বস হয়েছে। তারপরও আপনি যদি বাজারের পরিস্থিতি অনুযায়ী চামড়া কিনতে পারেন তাহলে এখনো মোটামুটি লাভ করা সম্ভব।
৪৫. মৌসুমি ফলের ব্যবসা
মৌসুমি ফলের ব্যবসা একটি লাভজনক ব্যবসার আইডিয়া। শহরের কোন জমজমাট এলাকায় বা গ্রামের বাজার এলাকায় যদি আপনার দোকান থাকে তাহলে এই ব্যবসা আপনি করতে পারেন। আপনি খুচরা ব্যবসা করতে পারেন আবার পাইকারি ব্যবসাও করতে পারেন। আড়তদার হলে পাইকারি ব্যবসা আর দোকান থাকলে খুচরা ব্যবসা।
আর আপনার আপনার বাড়ি যদি উত্তর বঙ্গে হয়ে থাকে আমের মৌসুমে আপনি ভাল একটা ব্যবসা করতে পারবেন। ছোট বড় অনেক উদ্যোক্তা এখন আমের ব্যবসার সাথে যুক্ত হচ্ছে।
৪৬. ডেকোরেটর ব্যবসা
বিয়ে, মেজবান, জন্মদিন, সুন্নতে খাতনা, আকিকা, হালখাতা, ধর্মীয় অনুষ্ঠান, সরকারি-বেসরকারি অফিসে অনুষ্ঠান এবং খাবারের আয়োজন করার জন্য ডেকোরেটর প্রতিষ্ঠানের দ্বারস্থ হতে হয়। গ্রাম থেকে শহর সব যায়গায় এদের কদর আছে।
এই ব্যবসা করার জন্য আপনার বিভিন্ন ধরণের সরঞ্জাম কিনতে হবে। যেমন প্যান্ডেল, লাইট, বাঁশ, পাতিল, প্লেট, চেয়ার, টেবিল ইত্যাদি।
৪৭. ডায়াগনস্টিক সেন্টার
এটি একটি সেবামূলক ব্যবসার আইডিয়া। ডাক্তাররাই সাধারণত এই ধরণের ব্যবসা করে থাকে। একটা ডায়াগনস্টিক সেন্টার দিতে হলে আপনার একটা বিল্ডিং ভাড়া নিতে হবে। তারপর নার্সসহ অন্যান্য স্টাফ নিয়োগ দিতে হবে। বিভিন্ন বিষয়ের বিশেষজ্ঞ ডাক্তারদের আপনার ডায়াগনস্টিক সেন্টারে বসার জন্য কমিশনসহ অন্যান্য অফারের ব্যবস্থা করতে হবে।
৪৮. চশমার ব্যবসা
দুই তিন লাখ টাকায় শুরু করা যায় এমন একটি ব্যবসা হচ্ছে চশমার ব্যবসা। পুরান ঢাকার পাটুয়াটুলি হচ্ছে চশমার জন্য বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় পাইকারি মার্কেট যেখান থেকে অনেক কম মূল্যে চশমা কিনতে পারবেন। এখানে আপনি ২০০০ টাকার ফ্রেম মাত্র ৫০০ টাকায় পেয়ে যাবেন।
চশমার দামও কোন নির্দিষ্ট নয়। ক্রেতাভেদে ২০০-৭০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি করা যায়। সাধারণ চশমার পাশাপাশি কন্টাক্ট লেন্সের চশমাও বিক্রি করতে পারেন। এগুলোর দাম তুলনামূলক বেশি তাই লাভের পরিমাণও বেশি।
৪৯. বইয়ের লাইব্রেরী
বইয়ের লাইব্রেরী দিতে হলে আপনাকে এমন যায়গা নির্বাচন করতে হবে যেখানে স্কুল, কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয় আছে। বইয়ের ব্যবসা দেওয়ার জন্য আপনার ট্রেড লাইসেন্স লাগবে। এছাড়া বাংলাদেশ পুস্তক বিক্রেতা ও সমিতির লাইসেন্স বা তাদের সদস্য হতে হবে। লাইব্রেরী ব্যবসায় আপনি বই প্রতি ২০-২৫% পর্যন্ত লাভ করতে পারবেন। প্রাথমিকভাবে ১ লাখ টাকা হলেই আপনি বইয়ের লাইব্রেরী দিতে পারবেন।
৫০. বই প্রকাশনী ব্যবসা
বই প্রকাশনী ব্যবসা একটি লাভজনক ব্যবসা। এই ব্যবসা করার জন্য আপনাকে লাইসেন্স নিতে হবে। বিভিন্ন লেখকদের সাথে যোগাযোগ রাখতে হবে। ভাল লেখকদের বই ছাপাতে পারলে আপনার লাভ বেশি। কারণ ভাল লেখকদের বইয়ের বিক্রি হয় বেশি। আবার যারা নতুন লেখক তাদের সাথে পার্টনারশিপে বই প্রকাশ করতে পারেন। এর ফলে আপনার ঝুঁকি অনেক কম থাকবে।
৫১. গাড়ি মেরামত ব্যবসা
আমাদের দেশে গাড়ির সংখ্যা বেড়েই চলেছে। সামনে এই সংখ্যা বাড়তেই থাকবে। তাই আপনি যদি গাড়ি মেরামতে দক্ষ কারিগর হয়ে থাকেন তাহলে এই ব্যবসা শুরু করতে পারেন। গাড়ি মেরামতের পাশাপাশি গাড়ির বিভিন্ন যন্ত্রাংশের ব্যবসাও করতে পারবেন। এই ব্যবসা যথেষ্ট লাভজনক।
৫২. গাড়ি বিক্রি ব্যবসা
গাড়ি বিক্রি ব্যবসা করতে চাইলে আপনাকে অনেক বড় বিনিয়োগ করতে হবে। গ্রাহক আকর্ষণ করার জন্য আকর্ষণীয় শো-রুম থাকতে হবে। আবার অনলাইনেও গাড়ি বিক্রির ব্যবসা করতে পারবেন।
আমাদের দেশে গাড়ি ব্যবসা মানেই বিদেশ থেকে পুরনো রিকন্ডিশন গাড়ি আমদানি করে দেশের মার্কেটে বিক্রি করা। তবে এখন মানুষের আয় বাড়ছে। তাই ধীরে ধীরে বিলাসবহুল দামী গাড়ির চাহিদাও বাড়ছে। আপনি চাইলে দেশের মার্কেট থেকেও ব্যবহৃত গাড়ি কিনে ব্যবসা করতে পারবেন। পুরনো গাড়ি কেনার আগে অবশ্যই ভাল করে সব যন্ত্রপাতি ঠিক আছে কিনা চেক করে নিবেন।
৫৩. রেন্ট-এ-কার ব্যবসা
বর্তমানে রেন্ট-এ-কার ব্যবসা একটি জমজমাট ব্যবসা। বিয়ে, পিকনিক, বেড়ানো, বিভিন্ন মিটিং এ অংশ নেওয়ার জন্য মানুষ গাড়ি ভাড়া করে থাকে। ইদসহ বিভিন্ন উপলক্ষে ভাড়া গাড়ির চাহিদা অনেক বেড়ে যায়।
আপনার যদি নিজের গাড়ি থাকে তাহলে এই ব্যবসা শুরু করতে পারেন। বড় আকারে করতে চাইলে কিছু পুরনো গাড়ি কিনে এই ব্যবসা চালাতে পারেন। ভাল এবং বিশ্বস্ত ড্রাইভার নিয়োগ দিতে হবে না হলে এরা আপনার লাভের একটা অংশ খেয়ে ফেলতে পারে।
৫৪. রাইড শেয়ার বিজনেস
উবারের দেখানো পথে এখন অনেক কোম্পানি রাইড শেয়ারিং সার্ভিসে আসছে। বাংলাদেশে পাঠাও প্রথম রাইড শেয়ারিং কোম্পানি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছিল।
রাইড শেয়ার ব্যবসা শুরু করার জন্য আপনাকে বড় ধরণের বিনিয়োগ করতে হবে। এই ধরণের অ্যাপ তৈরি করতে কয়েক লাখ টাকা খরচ করতে হতে পারে। তারপর অফিস নিতে এবং অফিস ব্যবস্থাপনার জন্য দক্ষ কর্মী লাগবে।
৫৫. কার ওয়াশ সার্ভিস
এই ধরণের ব্যবসা দেওয়ার জন্য আপনার মোটামুটি বড় একটা স্পেস লাগবে। গাড়ি ধুয়ে পরিষ্কার করার জন্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি কিনতে হবে এবং গাড়ি রাখার জন্য প্রয়োজনীয় অবকাঠামো তৈরি করতে হবে।
৫৬. কনসালটেন্সি বিজনেস
আপনি যদি কোন বিষয়ে বিশেষজ্ঞ হয়ে থাকেন তাহলে আপনি এই ব্যবসা শুরু করতে পারেন।কনসালটেন্সি মানে শুধু আইন, স্থাপত্য, মনোবিজ্ঞান বা বিনিয়োগ বিষয়ক না সেটা যে কোন বিষয়ে হতে পারে। আপনি যদি একজন ডিজিটাল মার্কেটার হয়ে থাকেন তাহলে আপনি ডিজিটাল মার্কেটিং বিষয়ে পরামর্শ দিতে পারেন। আপনি একজন কম্পিউটার এক্সপার্ট হয়ে থাকেন তাহলে কম্পিউটারের বিভিন্ন সমস্যা সমাধান এবং অ্যাপ্লিকেশন নিয়ে পরামর্শ দিয়ে আয় করতে পারবেন।
৫৭. সোশাল মিডিয়া ম্যানেজমেন্ট বিজনেস
সোশাল মিডিয়া মেনেজ করার করার জন্য আজকাল অনেক প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠছে। এটি একটি লাভজনক ব্যবসা। আপনি যদি সোশাল মিডিয়া পরিচালনায় খুব দক্ষ হয়ে থাকেন তাহলে আপনি এই ব্যবসা শুরু করতে পারেন।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যবস্থাপনা একটি সৃজনশীল কাজ। কোম্পানির বা ব্যক্তির অ্যাকাউন্ট পরিচালনা করা এবং তাদের ফলোয়ার সংখ্যা বাড়িয়ে পণ্য বা সার্ভিস বিক্রিতে সাহায্য করতে হয়। তাই খুব ভালভাবে পরিকল্পনা করে কাজ না করলে এসব কাজে সফল হওয়া বেশ কঠিন।
৫৮. ই-বুক বিক্রি
ই-বুক বিক্রি করাও একটি স্মার্ট ব্যবসা। অনেক লেখক আছেন যারা বিভিন্ন বিষয়ের উপর লেখালেখি করে সেগুলোর পিডিএফ তাদের ওয়েবসাইটের মাধ্যমে বিক্রি করে থাকে। আপনি যদি একটি পাঠকশ্রেণি গড়ে তুলতে পারেন তাহলে এই ব্যবসা করা আপনার জন্য সহজ হবে। আপনার লেখার মান এবং মার্কেটিং কৌশলের উপর নির্ভর করবে আপনি কেমন ব্যবসা করতে পারবেন।
৫৯. ক্লিনিং সার্ভিস
বিভিন্ন অফিস বা বাড়িতে পরিচ্ছন্নতা কর্মী সাপ্লাই দেওয়া একটি লাভজনক ব্যবসা। এই ধরণের ব্যবসা শুরু করার জন্য আপনাকে কিছু পরিচ্ছন্নতা কর্মী যোগার করতে হবে। তাদেরকে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে।
বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান আউট সোর্সিং পদ্ধতিতে পরিচ্ছন্নতা কর্মী নিয়োগ দেওয়ার জন্য বিজ্ঞাপন দিয়ে থাকে। এসব ব্যাপারে খোঁজ খবর রাখতে হবে। এছাড়া অনলাইন বা মিডিয়াতে আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিয়ে সম্ভাব্য গ্রাহকদের আপনার সার্ভিস সম্পর্কে জানাতে হবে।
৬০. বুটিক শপ
আজকাল নারী উদ্যোক্তাদের কাছে এটি একটি জনপ্রিয় ব্যবসার নাম। অনেক নারী ফ্যাশন ডিজাইনার তাদের ডিজাইন করা কাপড় নিজস্ব শো-রুমের মাধ্যমে বিক্রি করছে। এসব পোশাকের প্রচুর চাহিদা আছে। আপনি যদি যুগের সাথে তাল মিলিয়ে জামার সুন্দর সুন্দর ডিজাইন করতে পারেন তাহলে আপনি প্রচুর গ্রাহক পাবেন।
৬১. অ্যাকাউন্টিং সার্ভিস
অ্যাকাউন্টিং সার্ভিসের মধ্যে রয়েছে আর্থিক বিবরণী প্রস্তুত করা, ভ্যাট ট্যাক্স বিষয়ে পরামর্শ দেওয়া, কোম্পানির বিজনেস ডেভেলপমেন্টে সাহায্য করা ইত্যাদি। আপনি যদি দক্ষ এবং অভিজ্ঞ অ্যাকাউন্টেন্ট হয়ে থাকেন তাহলে এই ধরণের ব্যবসা শুরু করতে পারেন। সাধারণত সিএ কোর্স করা প্রফেশনাল ব্যক্তিরাই এই ব্যবসার জন্য উপযুক্ত। যেহেতু আপনি বড় বড় কোম্পানিকে আর্থিক বিষয়ে সাহায্য করবেন সুতরাং আপনার আয়ের পরিমাণও অনেক বেশি হবে।
৬২. ব্যাংকিং ব্যবসা
ব্যাংকিং ব্যবসা হচ্ছে অন্যতম লাভজনক ব্যবসার আইডিয়া। কিন্তু এটি শুধুমাত্র বড় বিনিয়োগকারীদের ব্যবসা। কারণ একটি ব্যাংক দিতে গেলে বর্তমানে ৫০০ কোটি টাকা পরিশোধিত মূলধন লাগবে যা আগে ছিল ৪০০ কোটি টাকা। আর আপনি চাইলেই একটি ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করতে পারবেন না, এখানে সরকারের নীতিগত সিদ্ধান্তের বিষয় জড়িত।
৬৩. বীমা ব্যবসা
পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে বীমা ব্যবসা খুব জনপ্রিয় হলেও বাংলাদেশে এখনও বীমা ব্যবসা কাঙ্ক্ষিত অবস্থানে পৌঁছাতে পারে নাই। দেশে ৭৯ তা বীমা কোম্পানি থাকলেও সাধারণ মানুষের দোরগোড়ায় এখনো বীমা সেবা সেভাবে যেতে পারে নাই।
বীমা ব্যবসা শুরু করতে গেলেও আপনাকে বড় ধরণের অর্থ বিনিয়োগ করতে হবে। জীবন বীমার জন্য পরিশোধিত মূলধন লাগবে ৩০ কোটি টাকা আর সাধারণ বীমার জন্য পরিশোধিত মূলধন লাগবে ৫০০ কোটি টাকা।
৬৪. ক্ষুদ্র ঋণ ব্যবসা
নোবেল বিজয়ী ডঃ ইউনুস হচ্ছে ক্ষুদ্র ঋণ ব্যবসার পথিকৃৎ। তাঁর প্রতিষ্ঠিত গ্রামীণ ব্যাংক বাংলাদেশে প্রথম ক্ষুদ্র ঋণের কার্যক্রম শুরু করে। বর্তমানে অনেক প্রতিষ্ঠান এই ব্যবসায়ের সাথে যুক্ত।
ক্ষুদ্র ঋণের ব্যবসা শুরু করার জন্য খুব বেশি পুঁজির প্রয়োজন নেই। আপনি ইচ্ছা করলে আপনার এলাকায় ছোট পরিসরে এই ব্যবসা শুরু করতে পারেন। তারপর ধীরে ধীরে ব্যবসার পরিধি বাড়াতে পারেন।
৬৫. এজেন্ট ব্যাংকিং
এজেন্ট ব্যাংকিং ব্যবসার আইডিয়া তাদের জন্য যারা এমন যায়গায় বসবাস করেন যেখানে প্রাইভেট ব্যাংকের সেবা খুব অপ্রতুল।
এজেন্ট ব্যাংকিং হচ্ছে মূল ব্যাংকে প্রতিনিধি হিসেবে বিভিন্ন ধরণের কাজ করা। যেমন অ্যাকাউন্ট খোলা, টাকা জমা এবং উঠানো, রেমিট্যান্স গ্রহণ, ইউটিলিটি বিল প্রদান, ইন্টারনেট ব্যাংকিং সেবা ইত্যাদি বিভিন্ন ধরণের কাজ করে থাকে।
আপনি যদি একজন উদ্যোক্তা হয়ে থাকেন তাহলে আপনিও এজেন্ট ব্যাংকিং এর একটি শাখা নিজ এলাকায় স্থাপন করতে পারেন। ব্যাংকের বিভিন্ন পণ্য বিক্রয়ের উপর আপনি কমিশন পাবেন।
৬৬. মানি এক্সচেঞ্জ এজেন্সি
বৈদেশিক মুদ্রার সাথে দেশের স্থানীয় মুদ্রার বিনিময় করা হচ্ছে মানি এক্সচেঞ্জের মূল কাজ। এই ব্যবসা যথেষ্ট লাভজনক। বাংলাদেশে ২৩০ টি মানি এক্সচেঞ্জ আছে এরা বছরে গড়ে ৫ লাখ টাকার উপর মুনাফা করে থাকে। এই ধরণের ব্যবসা করতে হলে আপনাকে বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমতি নিতে হবে। দেশের আইন অনুযায়ী মুদ্রা বিনিময় করতে হবে।
৬৭. গার্মেন্টস ব্যবসা
এটি একটি বড় ব্যবসার আইডিয়া। আমরা সবাই জানি গার্মেন্টস হচ্ছে বাংলাদেশের অর্থনীতির প্রাণ। বাংলাদেশে অসংখ্য গার্মেন্টস রয়েছে। প্রায় সবাই কম বেশি রপ্তানির অর্ডার পায়। আপনার যদি টেইলরিং বা ম্যানুফ্যাকচারিং বা মার্চেন্ডাইজিং অভিজ্ঞতা থাকে তাহলে আপনিও একটি গার্মেন্টস কারখানা দিতে পারেন। আপনার বিনিয়োগ সামর্থ্য অনুযায়ী আপনি গার্মেন্টস কারখানা দিবেন। আপনি ইচ্ছে করলে রপ্তানিমুখী কারখানা দিতে পারেন আবার দেশের বাজারকে টার্গেট করেও কারখানা প্রতিষ্ঠা করতে পারেন।
আরো পড়ুনঃ
-
কিভাবে গার্মেন্টস ব্যবসা শুরু করবেন?(একটি কমপ্লিট গাইড)
-
গার্মেন্টস ঝুট কাপড় ব্যবসা কিভাবে শুরু করবেন?